চট্টগ্রামে দেশের সর্ববৃহৎ জশনে জুলুছ ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সা:) অনুষ্ঠিত
একুশে জার্নাল ডটকম
অক্টোবর ৩১ ২০২০, ১৭:৫৬
মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, চট্টগ্রাম: পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন উপলক্ষে দেশের বৃহত্তম জশনে জুলুছ ও ঈদ-এ মিলাদুন্নবী(সাঃ) অনুষ্ঠিত হয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকালে জুলুছটি নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর,২নাম্বার গেইট মোড় প্রদক্ষিণ শেষে ষোলশহরে জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে শেষ হয়। মাদ্রাসার মাঠে এসে মিলাদুন্নবীর আলোচনা সভায় যোগ দেন মুসল্লিরা। পরে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ও শুক্রবার জুমার নামাজের কারণে এবার জুলুসের রোডম্যাপ ছিল সংক্ষিপ্ত।
কোলের শিশু থেকে বৃদ্ধ। কারও কারও হাতে লাল সবুজের পতাকা। সবার মুখে হামদ, নাত, দরুদ আর স্লোগান। দৃষ্টি কাড়ছিল ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো প্লেকার্ডও।
জুলুছে নেতৃত্ব দেন আনজুমানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, গাউছিয়া কমিটির যুগ্ন-মহাসচিব মোসেহেব উদ্দিন বখতেয়ার, জামেয়ার অধ্যক্ষ মুফতি অছিউর রহমান আলকাদেরি প্রমুখ।
এতে বিশেষ মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মুছলেম উদ্দিন আহমদ, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী, ঢাকা মুহাম্মদিয়া কাদেরিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল আলিম রিজভী, উপাধ্যক্ষ মুফতি আবুল কাশেম ফজলুল হক, মঈনুদ্দিন আশরাফি, আবু সুফিয়ান আলকাদেরী সহ দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরাম।
জুলুছে অংশ নিতে দূরের জেলা, উপজেলা, থানা থেকে ভক্ত ও আশেকরা দলে দলে যোগ দেন জামেয়া মাঠে।
জুলুছকে ঘিরে পথে পথে বিতরণ করা হয়েছিল মাস্ক। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে আগত মুসল্লিদের। জুলুছকে ঘিরে ব্যানার, পতাকায় ছেয়ে গেছিল মুরাদপুর থেকে মাদ্রাসা পর্যন্ত পুরো এলাকা। পথে পথে দেখা মেলেছিল তোরণ। সুললিত কণ্ঠের দরুদ, সালাম, হামদ নাতের ধ্বনিতে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা। আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের পাশাপাশি কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবকও প্রস্তুত ছিলেন স্বাস্থ্যবিধি ও শৃঙ্খলা রক্ষায়।
জুলুছটি জামেয়া মাঠে ফিরে আসলে মিলাদ, জুমার নামাজ ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তা শেষ হয়।
গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বলেন, স্বাস্থ্যবিধি ও জুলুছের শৃঙ্খলা রক্ষায় আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের পাশাপাশি কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। মুখে মাস্ক না থাকলে জুলুছ বা মিলাদে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। বিনামূল্যে বিতরণের জন্য কয়েক লাখ মাস্ক রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ কমিশনার (সিটি এসবি) মো. আবদুল ওয়ারিশ জানান, জুলুছ উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। নিয়মিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও করেছে দায়িত্ব পালন।
১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এ জুলুছ হয়ে আসছে। ওই বছর নগরের বলুয়ার দীঘি খানকাহ থেকে আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রা.) এ জুলুছেরর প্রচলন করেন।