ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা আছে কি না যাচাই করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, ‘এই সরকার পুরোনো কায়দায় খেলা শুরু করেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য পশ্চিমাদের বুঝাতে জঙ্গিবাদের নাটক সাজাচ্ছে। ডিসেম্বরে বিরোধীদের আন্দোলন দমন করার জন্য আবারও বাসে পেট্রোল বোমা ও অগ্নি সন্ত্রাসের নাটক সাজাচ্ছে। এসব বিষয়ে এই সরকারের নেতারা গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং করছে।

শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে নুর এসব কথা বলেন। গত ৭ অক্টোবর গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রনেতাসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এ কর্মসূচি হয়।

গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, এ দেশ চলবে এ দেশের জনগণের সরকার দিয়ে, দিল্লীর প্রেসক্রিপশনে এই দেশ চলবে না। আমরা দিল্লীকে বলে দিতে চাই আপনারা এই ফ্যাসিবাদ সরকারকে চান নাকি জনগণের সরকারকে চান সেটা স্পষ্ট করতে হবে।

নুর বলেন, হামলা মামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। একদিকে সরকার বিরোধীদের সভা সমাবেশে বাধা দিচ্ছে। অন্যদিকে তারা তাদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলেছে। আর সেই টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে সমাবেশ করছে।

ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, জনগণের ভ্যাট ট্যাক্সের টাকায় বেতন পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অথচ এরাই জনগণের ওপর গুলি চালাচ্ছে, জনগণকে হয়রানি করছে, ফলে এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনগণের কোন বিশ্বাস নাই।

রিজার্ভ সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছে না উল্লেখ করে নুর বলেন, আপনরাইতো নয় ছয় করছেন। একবার বলেন দূর্ভিক্ষ হবে আরেক বার বলেন দূর্ভিক্ষ হবে না। আপনাদের কথায়ই তো গড়মিল। আপনারা অনতিবিলম্বে অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। দেশের এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে আলোচনায় বসুন। আপনারা আলোচনায় না বসলে বাধ্য করা হবে আলোচনায় বসাতে। আপনারা পদত্যাগ না করলে বাধ্য করা হবে পদত্যাগ করতে।

সমাবেশে নুরুল হক নুর অবিলম্বে আটক ছাত্রনেতাসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবি করে বলেন, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আগামী ১৪ ও ২০ নভেম্বর ছাত্রদের জামিনের শুনানি আছে। ছাত্রদের জামিন না হলে শেখ হাসিনার পতনে কাফনের কাপড় নিয়ে রাস্তায় নামা হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব ঋজু, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, নৈতিক সমাজের চেয়ারম্যান অব. মেজর আমসা আমিন, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, হাসান আল মামুন, ফারুক হাসান, যুগ্ম সদস্যসচিব তারেক রহমান প্রমুখ।