কুড়িগ্রামে দুধকুমর নদের করালগ্রাসে সর্বস্ব বিলীন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

অক্টোবর ২৫ ২০২০, ১৭:৪৮

রোকন,কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে নাগেশ্বরী উপজেলায় দুধকুমর নদের ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে নদী কিনারার মানুষজন। উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নে ৯ নং ওয়ার্ড বড়বাড়ি এলাকায় ১ কিলোমিটারের বেশি জায়গা জুড়ে অব্যাহত আছে দুধকুমর নদের ভাংগন। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায় গত কয়েক মাস ধরে দুধকুমরের তান্ডবে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন অন্তত ১৫০ টি পরিবার। যাদের বেশিরভাগ এখন গৃহহীন কিংবা অন্যের জমিতে আশ্রিত হিসেবে আছেন। নদীভাংগনের শিকার ইউসুফ মিয়া বলেন,প্রায় ১৫০ টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমরা সরকারের তরফ থেকে আমরা কোনো বরাদ্দ পাইনাই।

দুধকুমরবাসী সুমন মিয়া জানান, কয়েকদিন আগে দুইটি বৈদ্যুতিক খুটি নদীতে ভেংগে পড়ে ৭৫ টি পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। পরে পার্শ্ববর্তী নয়ন বাজারের খুটি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয় বড়বাড়িতে। একটি পোল নদীতে ভেসে গেলেও অন্য খুটিটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাগেশ্বরী শাখা।

বড়বাড়িতে মাঠেরপাড় জামে মসজিদের কিছু অংশ দুধকুমর নদের আকস্মিক ভাংগনে ভেংগে গেছে। বাকি অংশ তড়িঘড়ি করে ভেংগে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের সাথে এই কাজে যোগ দিয়েছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলোর কর্মীরা।

রেল-নৌ,যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির রায়গঞ্জ ইউনিয়ন শাখার সহসভাপতি আব্দুল মান্নান প্রধান বলেন, আমরা দুধকুমর নদের সঠিক খনন ও বাধ সংরক্ষণের দাবী জানিয়ে মানববন্ধন করেছি। এখন দুধকুমর খননে ড্রেজার দেখা যাচ্ছে। আমাদের এই ক্ষয়ক্ষতিও আমরা দেখছি চোখের সামনেই। এবার পুর্বের ন্যায় নদী খননে দুর্নীতি করার চেষ্টা করা হলে অব্যাহত আন্দোলন গড়ে তুলবে গণকমিটি ও স্থানীয় জনগণ।

বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক ফাউন্ডেশনের রায়গঞ্জ ইউনিয়ন শাখার প্রধান স্বেচ্ছাসেবক মোজাম্মেল হক দুদু দাবি জানান দুধকুমর নদের ভাংগনের ফলে বাস্তুহারা প্রত্যেকটি পরিবারকে যেন সরকারি ভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আ স ম আব্দুল্যা আল ওয়ালীদ মাছুম বলেন, নদী ভাঙ্গনে দিন দিন বাস্তুহারা হচ্ছে শত শত মানুষ। শীঘ্রই নদী শাসন, ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা, তীর রক্ষায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কে অবহিত করেছি। আবারও সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবো যাতে শীঘ্রই ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা করা যায়।

এখানে উল্লেখ্য যে দুধকুমরের স্রোতের তোড়ে হাজীরমোড় থেকে মাঝিটারী পর্যন্ত বাধটি ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আর এ বিষয়ে এখনই সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশংকা রয়েছে।