কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শিক্ষক, অভিযোগ ভূক্তভোগী পরিবারের

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ফেব্রুয়ারি ২৩ ২০২২, ১৮:১৮

রোকন সরকার, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের চিলমারীর একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে স্কুল পড়ুয়া কিশোরদের জোটবদ্ধ করে তাদের দিয়ে চাঁদাবাজি, মারামারিসহ ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী এক পরিবার।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম হারুনুর রশিদ। তিনি উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের মুদাফৎথানা এস সি উচ্চ বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক এবং একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।

বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের সৈয়দ শামসুল হক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন চিলমারী উপজেলার পাত্রখাতা গ্রামের মো. দুলাল মিয়া ও তার পরিবার।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, এলাকায় আধিপত্য দেখাতে গত বছর নভেম্বরে দুলালের পরিবারের ওপর কিশোরদের দিয়ে অতর্কিত হামলা করান সহকারী শিক্ষক হারুন। এতে দুলালের ডান হাতের কবজি ভেঙে যায় এবং তার স্ত্রী ও ছেলে গুরুতর আহত হয়। এ নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে। তবে মামলা তুলতে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে একঘরে করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক। জীবনের নিরাপত্তা ও আসামিদের দ্রুত বিচার দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারটি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ওই শিক্ষক মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন। এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গেও জড়িত তিনি। তার ভয়ে এলাকার মানুষ কোনো কথা বলতে পারেন না। একজন শিক্ষক হয়ে তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনিময়, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী দুলাল মিয়া দাবি করেন, ‘মামলা হওয়ার পর গত ১৪ নভেম্বর হারুনসহ অন্যান্য আসামিরা আদালতে জামিন নেন। এরপর তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আমাকে মারার উদ্দেশ্যে একাধিকবার আমার বাসায় যায়। আমাকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের অকথ্য গালিগালাজ, ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসে। সেই থেকে আমি গা ঢাকা দিয়ে আছি।’

তবে, সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক হারুনুর রশিদ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সহপাঠীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুলালের ছেলের ওপর কিছু ছেলে হামলা করে। এসময় দুলাল এগিয়ে এলে তিনিও আহত হন। আমি আহতদের উদ্ধার হাসপাতালে ভর্তি করাই ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। পরে জানতে পারি উল্টো আমাকে হুকুমের আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আমি এই ঘটনায় জড়িত নই। আমি আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছি।’

ভুক্তভোগী দুলালের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চিরমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমান জানান, ‘সংশ্লিষ্ট ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের কোনও বিষয় নেই। অভিযুক্তরা জামিনে আছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।’

চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আমার উপজেলায় কিশোর গ্যাং বলতে কিছু নেই। আমরা এটি মাথাচাড়া করতে দেইনি।