কিশোরগঞ্জে সৈয়দ আশরাফের দ্বিতীয় জানাজা: শেষ শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষের ঢল

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ০৬ ২০১৯, ১২:৪৪

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় জানাজা কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার দুপুর ১টার দিকে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে তাঁর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক জগতসহ সর্বস্তরের মানুষ ও মরহুমের শুভানুধ্যায়ীরা অংশ নেন।
এর আগে জানাজার জন্য সংসদ ভবন প্লাজায় জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ হেলিকপ্টারে করে আনা হয় নিজ জেলা কিশোরগঞ্জে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মরদেহবাহী হেলিকপ্টারটি সরকারি গুরুদয়াল কলেজ মাঠে অবতরণ করলে সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মরদেহটি শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে নেয়া হয়। জানাযায় অংশ নিতে সকাল থেকেই শোলাকিয়া ঈদগাহ এলাকায় জনস্রোত নামে। বেলা ১২টা নাগাদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় শোলাকিয়া ময়দান। জানাযা শেষে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে গত ৩ জানুয়ারি রাতে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান সৈয়দ আশরাফ। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতসহ সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ব্যাংকক থেকে ৪ জানুয়ারি একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হয় তার মরদেহ। বিমানবন্দর থেকে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বেইলি রোডের বাসায়। সেখানে মরহুমকে শেষশ্রদ্ধা নিবেদন করেন দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা-সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা। পরে বাসভবন থেকে মরহুমের মরদেহ নিয়ে রাখা হয় সিএমএইচে।
প্রসঙ্গত, সততার প্রতীক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ২০০১ সালে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
যখন আব্দুল জলিল গ্রেপ্তার হন, তখন সৈয়দ আশরাফুল আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে মন্ত্রীসভা গঠিত হলে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পুনরায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৫ সালের ৯ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করেন। এক মাস এক সপ্তাহ দপ্তরবিহীন মন্ত্রী থাকার পর ১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী নিজের অধীনে রাখা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন।