কর্ণফুলীতে স্কুলশিক্ষিকার জায়গায় জোরপূর্বক স্থাপনা তৈরির অভিযোগ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ০৭ ২০২০, ২০:৩৪

নিজস্ব প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম কর্ণফুলীতে এনজিও সংস্থা ব্রাক স্কুলের এক শিক্ষিকার জমি জবর দখল করে জোরপূর্বক স্থাপনা তৈরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির কঠোর নজরধারি থাকায় এখনো কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

জবর দখলের ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ফকিরনীর হাট এলাকায়। জানা যায়, ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষিকা সুফিয়া আক্তার (৩৯) ইতোপুর্বে বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মাননীয় ভূমিমন্ত্রী, পটিয়া সিনিয়র সহকারি জজ (২য়) আদালত, সিএমপি পুলিশ কমিশনার, বন্দর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার, পতেঙ্গা র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক, ইউএনও, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু মহিলার দাবি এখনো তার সমস্যার কোন সুরাহা হয়নি।

স্কুল শিক্ষিকা জানান, তার স্বামী মো. শাহনুর সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে বাসায় পড়ে রয়েছেন। তার দুটি সন্তান নিয়ে বেশ কষ্টে দিনপাত করছেন। কোন রকমে অভাবের সংসার চালাতে তিনি জুলধা পাইপের ঘোড়া এলাকার একটি ব্রাক স্কুলে ছেলে-মেয়েদের পড়ানোর কাজ নিয়েছেন।

স্কুল শিক্ষিকা নাম উল্লেখ্য করে অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জুলধা ৯নং ওয়ার্ডের আবদুল মোনাফ জমাদার বাড়ির এনামুল হক, ওবায়দুল হক রনি, সিরাজুল হক লিটন, মো. ইউসুফ, জোহরা বেগম, তামান্না বেগম ও মো. আমিনের নেতৃত্বে তার তিন কড়া জমিতে জোরপূর্বক অবৈধভাবে স্থাপনা তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। যদিও পটিয়া সিনিয়র সহকারি জজ আদালতের আদেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ও শান্তি পূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু লকডাউনে সব বন্ধ থাকার সুযোগে পুনরায় অভিযুক্তরা স্থাপনা তৈরি করছেন।’

মহিলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে জুলধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিক আহমদ অডিও বার্তায় বলেন, ‘জোরপূর্বক স্থাপনা তৈরি করছে বলে সুফিয়া আক্তার নামে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনাটি আমি কিছুটা জানি কেনোনা ঐ মহিলা আদালত ও প্রশাসনের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু সব জায়গায় কাগজপত্র দেখে মহিলা জায়গা পাওয়ার কোন অধিকার রাখে না বলে অভিযোগ খারিজ করে দেয়। মহিলাটি বার বার ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে অভিযোগ করলে অনেকবার ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে শুনেছি। তবে আমি যতটুকু জানি মহিলার কোন ওখানে স্বত্ব নেই। হয়তো মহিলার স্বামীর থাকতে পারে। তারপরেও কোন কাগজপত্র থাকলে আমার সাথে যোগাযোগ করলে সমাধা করতে চেষ্টা করব।’

ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত ফকিরনীর হাট এলাকার মো.সেলিম নামে এক যুবক জানান, ‘বড় মাছ কখনো ছোট মাছ কে গিলে খেতে পারে না। হয়তো ব্রাক স্কুলের শিক্ষিকাটি কোন না প্রভাবশালী কতৃক নির্যাতিত হচ্ছে বিধায় বার বার প্রশাসনের সহযোগিতা যাচ্ছেন। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও চেয়ারম্যান দুই পক্ষকে ডেকে সমাধান করতে পারে।’

অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই নাজমুল শাহ্ বলেন, ‘কয়েকমাস আগে মনেহয় মহিলা থানায় অভিযোগ করলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য মানুষসহ দু’পক্ষের লোকজনের সাথে বসে একটি সুষ্ঠু সমাধা করে দিয়েছিলাম। যা মহিলাও সন্তুষ্ট হয়ে তখন অনেকদিন নীরব ছিল। কিন্তু সম্প্রতি আবারো মহিলা বার বার ৯৯৯ নম্বরে কল করে নানা অভিযোগ করেছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মহিলাকে আর পাওয়া যায় না। এভাবে কয়েকবার পুলিশকে বিভ্রান্তি ও হয়রানি করায় মহিলার বিরুদ্ধে থানায় জিডি নোট করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে শাহমীর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মো. নাছির উদ্দিন বলেন, ‘মহিলা আদালতে যে অভিযোগ করেছিল তা বিচারকার্য শেষ হয়ে বিবাদির পক্ষে রায় হয়েছে এবং বর্তমানে বিরোধীয় জায়গায় কোন প্রকার স্থাপনা তৈরিকালে বারণ করার কোন আদালতের আদেশ নেই। আইন অমান্য করে কেউ স্থাপনা তৈরির কাজ করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির স্বার্থে আমরা অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কিন্তু মহিলা বার বার ৯৯৯ নম্বরে কল করে প্রশাসনকে হয়রানি করেছেন। অথচ যতবার ৯৯৯ নম্বরে কল করেছে ততবার পুলিশ সাড়া দিয়েছেন।’