করোনা পরিস্থিতিতে পরিবার নিয়ে কষ্টে আছেন ইমাম-মুয়াজ্জিন ও হাফেজরা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ০৪ ২০২০, ১৪:২৩

রেজওয়ান উল্লাহ,কলারোয়া(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি:

করোনা পরিস্থিতিতে কষ্টে দিন যাচ্ছে মসজিদে দায়িত্ব পালন করা ইমাম, মুয়াজ্জিন ও পবিত্র রমজানে মসজিদে খতম তারাবি পড়ানো হফেজদের। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষরা সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলেও এদের কেউ খবর রাখছেন না। এমনিতে স্বল্প বেতন পান তারা। তার উপর গত দেড় মাস ধরে চলতে থাকা অঘোষিত লকডাউনে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে তাদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। ধর্মীয় অবস্থানে তাদের মর্যাদা অনেক বেশি হলেও বাস্তবতায় বেতন পান নামমাত্র। দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কিছু ধর্মীয় সেবার মাধ্যমে বাড়তি উপার্জন করে সংসারের যাবতীয় প্রয়োজন মেটাতেন। করোনায় থেমে গেছে এসব সেবা কার্যক্রম। এতে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সংসারে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।

খবর নিয়ে জানা গেছে, সারদেশের ন্যায় কলারোয়া উপজেলার অধিকাংশ মসজিদে খতম তারাবি হচ্ছে না। মসজিদগুলোতে সুরা তারাবির নামাজ আদায় করা হচ্ছে। যেখানে প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মুসল্লিদের পদচারণায় ভরপুর ছিল মসজিদ প্রাঙ্গণ এবার তা একেবারেই নীরব। অতিক্রান্ত হচ্ছে এক অচেনা ও অপ্রত্যাশিত রমজান মাস।

উপজেলার হেলাতলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার হাফেজ মহিদুজ্জামান বলেন, বেশ কয়েক বছর যাবত খতম তারাবি পড়াচ্ছি। প্রতিবার খতম শেষে প্রাপ্ত সম্মানী ভাতা পেতাম।ওই টাকা দিয়ে সবার ঈদের খরচ হয়ে যেত। অন্য সব

।হাফেজদের মতো আমারও অন্যরকম ভালো লাগতো। কিন্তু এবারের রমজান মাসটা ভিন্ন। খতম তারাবি ছাড়া রমজান হবে ভাবতেই পারিনি।

উপজেলার জালালাবাদের পূর্ব পাড়া জামে মসজিদের ইমাম আঃ রকিব বলেন মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতির দায়িত্ব পালন করে সাড়ে ৪ হাজার টাকা সম্মানী পাই। তা দিয়ে ৪ সদস্যের পরিবার নিয়ে চলতে অনেক কষ্ট হয়। রমজান মাসে বাড়তি কিছু সম্মানী আশা করেছিলাম। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে বাড়তি সম্মানী পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।

জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় সাড়ে ৫শত থেকে৬শত টি মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে প্রায় দেড় হাজার ইমাম-মুয়াজ্জিন রয়েছে।

উপজেলার কয়েকজন ইমাম-মুয়াজ্জিন ও খতিবের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অধিকাংশ মসজিদে মুয়াজ্জিনের সম্মানী ২ থেকে ৫ হাজার টাকা। ধর্মপ্রাণ ধর্মীয় শিক্ষিতরা পেশা হিসেবে বেছে নিলেও মসজিদ কমিটি থেকে পাওয়া অর্থে সংসার চলে না। অভাব-অনটন লেগেই থাকে। ইমামদের সর্বোচ্চ ৬-৭ হাজার এবং মুয়াজ্জিনদের এক থেকে দুই হাজার টাকা সম্মানী দেয়া হয়। নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি খতমে কোরআন ও অন্যান্য ধর্মীয় সেবা দিয়ে সামান্য সম্মানী পান ইমাম-মুয়াজ্জিনরা। তবে রমজানে তারাবি পড়ানোর ফলে মুসুল্লিদের থেকে টাকা উঠিয়ে তারাবির ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং খাদেমকে ভাগ করে দেয়া হয়। এতে টানাপোড়নের সংসারে ঈদ উদযাপনের খরচ জোগাড় হয়ে যেতো।

এই করোনাভাইরাসের মহামারির সময়ে সেটা আর হয়ে উঠছে না। কেননা তারা যে সামান্য সম্মানী পেতেন, এখন সেটাও বন্ধ।