করোনা নিয়ন্ত্রণে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপারের উদ্যোগ
একুশে জার্নাল ডটকম
মার্চ ২৯ ২০২০, ১৩:৫৪
রোকন,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ প্রশাসন সদর থানা সহ প্রতিটি থানায় সামাজিক দুরত্ব নির্দিষ্ট করে শতভাগ সফল হতে জেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে তাদেরকে ভিন্ন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানা গেছে। অপরদিকে সাধারণ জনতাকে ফার্মেসী গুলোয় সবসময় প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্র কিনতে তাদের ভীড় লক্ষ করা গেছে। কিন্তু করোনাভাইরাস যেহেতু একটি সংক্রামক রোগ। তাই রাস্তায় নেমে জনসাধারণকে ন্যূনতম দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান অব্যাহত রেখে তা জনসাধারনের জন্য সহজে মানিয়ে নিতে বেশকিছু নতুন পদক্ষেপ সংযোজন করেছে জেলা পুলিশ কুড়িগ্রাম।
জেলা উপজেলা সদর সহ ইউনিয়ন পর্যায়ে বসবাসরত মানুষদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমন ও প্রতিরোধ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতা সৃষ্টি হলেও জেলার প্রান্তিক মানুষদের মধ্যে এখনও যথেষ্ট উদাসীনতা লক্ষ করা গেছে। জেলার প্রান্তিক মানুষদের কথা বিবেচনা করে ও জেলা পুলিশ কে শতভাগ সবদিক থেকে প্রস্তুত করতে সময় ও পরিবেশ বুঝে সংযোজিত হচ্ছে নতুন পদক্ষেপ। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে প্রচারনাকে গ্রহণযোগ্য ও সহজ করতে গতকাল থেকে কুড়িগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় মাইকিং সহ আচরণ ও চলাফেরায় অভ্যাস পরিবর্তনে নেয়া হচ্ছে বাধ্যতামুলক সামাজিক দুরত্ব নির্দিষ্টকরন লাল গোলাকার চিহ্ন, নিয়মিত জীবানুনাশক স্প্রে, আপদকালিন প্রান্তিক পর্যায়ে খাদ্য সরবারহকারী টিম, প্রস্তুত হচ্ছে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ বাহিনী। ফ্রন্ট লাইনে থাকা পুলিশ টিম কোথাও সমস্যা চিহ্নিত করলে বা ভাইরাস সংক্রমিত এলাকায় কুইক রেসপন্স টিম হিসেবে পুলিশের “দ্রুত পদক্ষেপ বাহিনী” দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, জেলার প্রত্যেকটি থানা কার্যালয়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ও সেবা নিতে আসা মানুষদের মধ্যে বাধ্যতামুলক সামাজিক দুরত্ব নির্দিষ্ট করতে লাল কালি চিহ্ন দারা বৃত্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা সদরের হাসপাতাল সংলগ্ন এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে ফার্মেসি গুলোর সম্মুখে লাল কালিতে বিশেষজ্ঞদের দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী ন্যূনতম বাধ্যতামূলক সামাজিক দূরত্ব নির্দিষ্ট করে দেয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করবে জেলা পুলিশ কুড়িগ্রাম । সরকারি হাসপাতাল সহ যে সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা অফিস সেবাদান কর্মসূচীর জন্য সীমিত আকারে কার্যক্রম চালানোর আওতায় পরে, সে স্থানগুলোতে নিরাপদ দুরত্বে দারানোর অভ্যাস তৈরিতে লাল কালি দারা বৃত্ত চিহ্নিত করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এ কার্যক্রম গুলোকে বাস্তবায়নে পুলিশের পাশাপাশি জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দুইজন করে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে করোনা মোকাবেলায় সংগঠন তৈরি করেও নেতৃবৃন্দ যোগাযোগ করতে পারবেন। উপজেলা ইউনিয়ন ভিত্তিক স্বেচ্ছাশ্রম দিতে হবে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি সহ ১১ টি থানা ওসিদের এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। স্থানীয় বনিক সমিতি ও ফার্মেসি দোকানদারদের সাথে আলোচনা করে দোকান ডেস্ক থেকে ১ মিটার দুরত্ব এবং দোকানের ভিতর বাহির ও সামনের রাস্তার মাপ অনুযায়ী ক্রেতাদের নির্দিষ্ট দুরে দুরে দারানোর জন্য লাল রং দ্বারা গোল চিহ্ন বা বৃত্ত একে নিয়ে ফার্মেসী গুলো তাদের ব্যবসা পরিচালনা করবে। সম্মানিত ক্রেতাগণ স্বচ্ছন্দে নির্দিষ্ট দূরত্বে চিহ্নিত স্থানে অবস্থান করে ওষুধ ক্রয় করবেন। এতে করে ক্রেতা ও জনসাধারণ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবেন।
কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় পুলিশ যে কোন পরিস্থিতিতে কাজ করে আসছে। সামনের দিনগুলিতেও জনগণকে নিরাপদ রাখতে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও সামাজিক দুরত্ব বজায় বাধ্যতামুলক করতে হচ্ছে। সচেতনমুলক কার্যক্রমের অংশে নিয়মগুলো পুলিশকে দিয়ে শুরু করলে তা নিয়ে এলাকায় ব্যপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়ে অনুকরনীয় হতে পারে। তাছারা ভাইরাস সংক্রমন মোকাবেলায় জেলা পুলিশ ফ্রন্ট লাইনে কাজ করছে ফলে পুলিশ সদস্যদের সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী এবং সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক করোনা ভাইরাস সংক্রমন থেকে জেলাবাসীকে নিরাপদ রাখতে বাধ্যতামুলক সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা ছারা বিকল্প আর কোন পথ খোলা নেই। তিনি আবারও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করেন। সেই সাথে পুলিশী সেবা দিয়ে শতভাগ সফলতা কামনা করেন।।