ওসমানীনগরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র বিরুদ্ধে স্থানীয় সাংসদের অভিযোগ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

আগস্ট ৩০ ২০২০, ১৮:২৪

ওসমানীনগর প্রতিনিধি:

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে দুর্নীতিমূলক ও ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য (সিলেট-২) মোকাব্বির খান। গত ১৯ আগস্ট এমপি মোকাব্বির খান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি’র বরাবরে এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বিষয়টি গুরুত্বে সাথে তদন্ত পূর্বক দ্রæত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সিনিয়র সচিবকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ময়নুল হক চৌধুরী নিজের অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে উপজেলার চেয়ারম্যান পদবী ব্যবহার করে সরকারি কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষমতার অপব্যববহার করছেন। তিনি নিয়ম বর্হিভূতভাবে দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ডে জড়িত হওয়ায় অত্র উপজেলার জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তার (উপজেলা চেয়ারম্যানের) ইচ্ছাকৃত অসহযোগিতার কারণে উপজেলার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাধার সম্মুখিন হচ্ছে।
অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্ট্রার শূন্যপদে ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর ও তাজপুর ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্ট্রার শূন্যপদে ২০১৯ সালের ২ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রাপ্ত আবেদনগুলি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য চলতি বছরের ৫ আগস্ট এ সংক্রান্ত সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু অনিবার্য কারণ দেখিয়ে হঠাৎ করে সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার শূণ্যপদ পূরণের আইনী বিধান থাকলেও গত ২২ মাসেও পদ দুটির নিয়োগ চুড়ান্ত হয়নি। নিয়োগ কমিটির সদস্য, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা ময়নুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। একইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: তাহমিনা আক্তার। তিনি দায়িত্ব পালনে স্বেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, নিকাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার নিয়োগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সদ্য বদলীকৃত সাবরেজিষ্ট্রার পরস্পর যোগসাজশে একাধিক আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সরকারি নথি থেকে তাদের প্রছন্দের প্রার্থীদের কাছে সরবরাহ করেছেন।
এদিকে ওসমানীনগর উপজেলা প্রশাসনের সংবাদ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ওসমানীনগর উপজেলা প্রেসক্লাব। সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ এ ঘোষণা দেন। প্রেসক্লাবের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি ওসমানীনগর উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা নিজের ব্যর্থতা ও অনৈতিক কর্মকান্ড আড়াল রাখতে প্রকৃত সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশ এবং তথ্য প্রাপ্তি থেকে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন সাংবাদিকরা। তাই সরকারের উন্নয়ন কাজের চিত্র সাধারণ মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

অভিযোগের বিষয়ে ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা ময়নুল হক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

সিলেট ২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষমতা অপব্যবহার করছেন। তাদের এসব কর্মকান্ডে বিষয়ে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী মহোদয় ইতোমধ্যে সচিবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। নিদের্শ বাস্তবায়িত হলে উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রমে গতির সঞ্চার হবে। দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে স্থানীয় জনসাধারণ।

এব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো: মশিউর রহমান এনডিসির সাথে (মোবাইল ফোনে) যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।