ওসমানীনগরের শিপন হত্যা মামলার বাদী পরিবারকে হুমকি ভয়ভীতির অভিযোগ
একুশে জার্নাল
মে ২৬ ২০২০, ০৬:৫৩
ওসমানীনগর প্রতিনিধি:
ওসমানীনগরের ঈশাগ্রাই গ্রামের শিপন হত্যার তিন সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও প্রধান আসামি ধন মেম্বার ও তার ছেলে নাহিদ এখনও গ্রেফতার করতে পারেন নি পুলিশ।
একটি বিশ্বস্ত সুত্র থেকে জানা গেছে এ মামলার প্রধান আসামি ধন মেম্বারের প্রভাবশালী আত্মীয়দের ধারা ওসমানীনগর থানার কয়েকজন পুলিশ অফিসারের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে ধন মেম্বার ধরা পড়ছে না। আসামি ধরতে পুলিশ অভিযানে যাবার আগেই আসামি পক্ষ খবর পেয়ে যাচ্ছে।
এদিকে এ হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত কয়েকজন আসামিকে মামলা থেকে বাদ দিতে মামলার বাদী শিপনের ভাই রিপনকে হুমকি ধামকি সহ নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আলাপকালে নিহত শিপনের একমাত্র ভাই মামলার বাদী রিপন মিয়া জানান প্রধান আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় আমি ও মা বাবা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমার দুই চাচাদের মধ্যে কেউ বাড়িতে থাকেন না । আসামি ধন মেম্বার ও মানিকের বাড়ি আমার বাড়ির উভয় পাশে। মামলার পর থেকে তাদের বাড়িতে অপরিচিত পুরুষদের আসা যাওয়া বেড়ে গেছে। তারা বিভিন্ন ভাবে হত্যা মামলা থেকে ধন মেম্বার ও তার ছেলে নাহিদ আহমেদকে বাদ না দিলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে আমাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল। কিন্তু আমার মা বাবা আমাকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরবেন বিধায় বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করে আসছি। দুই দিন পূর্বে আমাদের কাছে সংবাদ আসে প্রধান আসামি আমাদের ও মামলার সাক্ষীদের উপর নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলা দায়ের করার জন্য এক দালালের মাধ্যমে চেষ্টা করে আসছে। এ ব্যাপারে আমি ও আমার পরিবার চরম উৎকন্ঠা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগচ্ছি। আমি ও আমার পরিবার খুনিদের সাথে আপোষ না করার জন্য সংকল্পবদ্ধ।
গতকাল ঈদের দিন সন্ধ্যায় হটাৎ করে আসামি মানিকের ঘর থেকে তিন অপরিচিত লোককে বের হতে দেখে আমার বোন আমাকে জানায়। আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে আতংকিত হয়ে আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও থানাকে বিষয়টি জানাই। চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন গেদাই মিয়া গ্রামের লোকদের সাথে নিয়ে মানিকের ঘরে এক অপরিচিত যুবতীকে দেখতে পান। সে তার নাম ঠিকানা ও চেহারা দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করে। পুলিশ আসছে শুনে সে স্বীকার করে তার বাড়ি বালাগঞ্জ থানায়। পরে যুবতীর বাবাকে চেয়ারম্যান ডেকে নিয়ে এসে তার জিম্মায় মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রিপন ও গ্রামের লোকেরা মনে করেন ধন মেম্বার মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা করার জন্য মহিলাকে গ্রামে পাঠিয়েছে।কারণ বাড়িতে কেউ না থাকা সত্ত্বেও একজন খুনির বাড়িতে একজন যুবতীর বেড়াতে আসার কোন যুক্তি নাই। তবে মহিলা জানান মানিক ও ধন মেম্বার তার দূর সম্পর্কীয় আত্মীয়।
মামলার স্বাক্ষী ছুরাব মিয়া জানান মামলায় স্বাক্ষী না দিতে আমাকে ও আমার ছেলেদেরকে মামলায় ফাঁসানোর প্রকাশ্য হুমকি দেওয়ায় হচ্ছে।
উল্লেখ্য, যে গত ৬ই মে উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউপির ঈশাগ্রাই গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য একই গ্রামের মৃত দরছ উল্যার ছেলের ছুলফির আঘাতে প্রতিপক্ষ আশিক মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া (২৪) গুরুত আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে সাতটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিপনকে মৃত ঘোষণা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর দিন নিহত শিপনের বড় ভাই রিপন মিয়া বাদি হয়ে ধন মেম্বারকে প্রধান আসামি করে মোট ২৭জনের নামে ওসমানীনগর থানায় মামলা হত্যা দায়ের করেন। এবং ওইদিন পালানোর সময় ৯ জনকে পুলিশ আটক করে।