উদ্বোধনের অপেক্ষায় জুড়ী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন 

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ০৭ ২০২২, ১৯:১৭

জহিরুল ইসলাম সরকার, জুড়ী: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। শিঘ্রই এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। উপজেলার জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার।

এই উপজেলায় এতদিন ধরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় পাশ্ববর্তী কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলার সাহায্য নিতে হত। ফলে আগুন লাগার স্থানে উদ্ধারকারী দল আসার আগেই আগুনে পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়। বর্তমানে ফায়ার স্টেশন নির্মাণের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। উপজেলা বাসী নতুন ফায়ার স্টেশন উদ্বোধনের প্রহর গুনছে।

নতুন ফায়ার স্টেশন হওয়ায় খুশি সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলছেন, আগে আগুন লাগলে নিজেরাই নির্বাপণ করতেন। ফায়ার স্টেশন পাশের উপজেলায় হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে অনেকটা সময় লেগে যেত। আর এতে আগুনে প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হতো। নতুন ফায়ার স্টেশন হওয়ায় এই আশঙ্কা মন থেকে দূর হয়েছে উপজেলা বাসীর। তাদের মনে এখন একটাই ভরসা, শুধু অগ্নিকান্ডে নয়; প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ যেকোন দুর্ঘটনায় অল্প সময়ে ও খুব সহজে সেবা মিলবে ফায়ার সার্ভিসের।

নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার স্টেশনটি সুসজ্জিত করে রাখা হয়েছে। নতুন এ স্টেশনের রং দূর থেকেই দৃষ্টি কাড়ে। অনেক উৎসুক জনতা ছবি ও সেলফি তুলছেন। গতি, সেবা ও ত্যাগ নিয়ে এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায় এ ফায়ার স্টেশনটি।

উপজেলার ভবানীপুর এলাকায় সর্বশেষ কয়েকদিন আগে আগুন লেগে একটি পরিবারের সকল আসবাবপত্র সহ বেশ কয়েকটি দোকান পুড়ে একেবারে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য কলেজ শিক্ষার্থী মরিয়ম উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের খবরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাসা ও দোকানে আগুন লাগার পর পাশের উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার আগেই ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। তবে শুনে ভালো লাগছে এখন জুড়ীতে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হয়েছে। এতে অগ্নিকান্ডে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমবে।’

জুড়ী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিংকু রঞ্জন দাস বলেন, জুড়ীতে প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় পাশের উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসতে আসতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। এখন আমাদের উপজেলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন নির্মিত হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। আমরা উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুণছি।’

কুলাউড়া ফায়ার স্টেশন অফিসার বলেন, জুড়ী ফায়ার স্টেশন টি গণপূর্ত বিভাগ মৌলভীবাজার বাস্তবায়ন করেছে। এরইমধ্যে প্রায় সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অল্প যেসব কাজ বাকি রয়েছে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। ইতিমধ্যে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ ফায়ার স্টেশনটি পরিদর্শন করে গেছেন। আশা করছি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি উদ্বোধন করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোনিয়া সুলতানা বলেন, এ উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে পাশ্ববর্তী দুই উপজেলার সাহায্য নিতে হয়। উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে আসার আগেই অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন যা বাস্তবে রূপ দিয়েছে সরকার। অত্যান্ত আনন্দের বিষয় শিগগিরই জুড়ীবাসী আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পেতে যাচ্ছি।