ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
একুশে জার্নাল ডটকম
নভেম্বর ১৭ ২০২২, ১৭:৩৯
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তির ধর্ম ইসলামের মর্মবাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমাজ থেকে অন্ধকার, অশিক্ষা, বিভেদ, সহিংসতা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের পাশাপাশি ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা সম্মেলন-২০২২ এবং হজ ও ওমরাহ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই ইসলামের বাণীকে হৃদয়ে ধারণ করি এবং সমাজ থেকে অন্ধকার, অশিক্ষা, বিভেদ, সহিংসতা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করি। যে অপশক্তি ইসলামের অপব্যাখ্যা করছে তাদের প্রতিহত করুন।’
গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগদান করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ইসলামের জন্য অনেক কাজ করেছেন এবং তার উত্তরসূরি হিসেবে সরকার ইসলাম ও জনগণের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধর্ম। কিন্তু কিছু সন্ত্রাসীর কারণে এই পবিত্র ধর্ম সমালোচনার সম্মুখীন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত রেখে পবিত্র ইসলামের শান্তিপূর্ণ গৌরব সমুন্নত রাখতে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ এবং আলেম ওলামাদেরকে সম্পৃক্ত করেছি। মানবসম্পদ উন্নয়নে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করে মসজিদের ইমামগণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় লক্ষ লক্ষ শিশুকে কোরআন শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ৬৪৩ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প পুনরায় চালু করি। বর্তমানে এ প্রকল্পের বরাদ্দ ২ হাজার ২৭২ কোটি ৪ লক্ষ টাকায় উন্নীত হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয় একটি করে মোট ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।
হজযাত্রীদের সঙ্গে কোনো প্রতারণা বা হয়রানি করলে এজেন্সিগুলোকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হজযাত্রীদের হজ-সম্পর্কিত যথাযথ তথ্য সরবরাহ, তাদের বর্তমান প্রযুক্তি-ভিত্তিক হজ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতন, হজ এজেন্সির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এবং মধ্যস্বত্বভোগী ও প্রতারকদের প্রভাব হ্রাস করতে জাতীয় পর্যায়ের হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা সম্মেলন-২০২২ এবং হজ ও ওমরাহ মেলার এই আয়োজন।
সম্মেলনে ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা: অর্জন ও কর্মকাণ্ড’ এবং ‘ই-হজ ব্যবস্থাপনা এবং মক্কা উদ্যোগের রুট’ বিষয়ে দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন হজ ও আর্থিক সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তিন দিনব্যাপী হজ ও ওমরাহ মেলায় প্রায় ১৫০টি স্টল এবং প্যাভিলিয়ন স্থাপন করেছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হজযাত্রীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। বাংলাদেশ বিশ্বের ৪র্থ বৃহত্তম হজযাত্রী প্রেরণকারী দেশ।
বাংলাদেশের ৯০ শতাংশের বেশি হজযাত্রী এবং শতভাগ ওমরাহ যাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরবে যান।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান, বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল-দাহিলান এবং হাব সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন তসলিমও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।