ইসলামী রাজনীতির অতীত বর্তমান
একুশে জার্নাল
নভেম্বর ১৭ ২০১৮, ১৬:৪৪
সৈয়দ শামছুল হুদা: প্রিয় বন্ধুরা! জানতে ইচ্ছে করে, আমাদের দেশের উলামায়ে কেরাম বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ময়দানে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অতীত থেকেই এ ধারা চলে আসছে। চলমান সময়ে আলেমদের রাজনীতির যে লেজে-গুবরে অবস্থা তা দেখে খুব আফসোস হচ্ছে। আমরা শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এবং মুফতি আমিনী রহ. এর রাজনীতির যুগ কিছুটা দেখেছি। কিন্তু দেখিনি, আতহার আলী রহ., সৈয়দ মুসলেহ উদ্দীন রহ., শামছুল হুদা পাঁচবাগী রহ., খতীবে আযম সিদ্দীক আহমদ রহ., নুর মুহাম্মদ আজমী রহ. প্রমুখদের রাজনীতি।
আচ্ছা তাঁরা কি গণমানুষের রাজনীতি করেছিলেন? নাকি এখনকার মতো মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে সীমিত পরিসরেই রাজনীতি করেছিলেন? উনারা কি সাধারণ মানুষকেও আশে-পাশে বিভিন্ন পদ-পদবীতে স্থান দিয়েছিলেন? নাকি শুধু নির্দিষ্ট ঘরানার আলেমদের/ভক্তদেরকেই বিভিন্ন পদে পদায়ন করেছিলেন?
আমি ঐক্যফ্রন্টের অগ্রযাত্রা দেখে শঙ্কিত। কারণ, আমরা কওমী ঘরানার উলামায়ে কেরাম যে রাজনীতির গন্ডি মেনে চলি, তা খুব সহসাই সীমিত হয়ে আসবে। রাজনীতির মাঠে খুব সহসা আর সরগরম করা যাবে না। দেশের সাধারণ শিক্ষিত শ্রেণি ঐক্যফ্রন্টকে খুব আপন করে নিবে এটা মনে রাখবেন। অনেক রথি-মহারথি এই ঐক্যফ্রন্টের নেপথ্যে আছে। তারা কেহই চায় না, এদেশে হুজুররাও রাজনীতি করুক। তারাও রাজনীতির লাগাম টেনে ধরার মতো অবস্থায় থাকুক।
আমি আগামীর পরিবর্তনকে স্বাগত জানাই। কিন্তু আমি আমার অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কিত। আমাদের বর্তমান রাজনীতির আকাবিরগণ যারা নির্দিষ্ট গণ্ডীর ভেতর থেকে রাজনীতি করেন, নির্দিষ্ট ঘরানার লোকদের সাথেই মেলামেশা করেন, যারা শুধু নির্দিষ্ট ইস্যুতেই মাঠসরগরম করে রাখেন, তাদের জন্য আগামী দিনগুলো সুখকর হবে কি?
ঐক্যফ্রন্ট কারো জন্য অসুবিধার কারণ হবে না। কিন্তু ইসলামী রাজনীতিটা সংকোচিত হয়ে যাবে। এর পরিসরটা আমার কাছে মনে হচ্ছে সীমিত হয়ে যাবে।
বর্তমান সরকার জঙ্গীববাদের জুজুর ভয় দেখিয়ে আলেম সমাজকে যেভাবে একটা সাইড করে ফেলেছে, অনেককে ভক্ত-অনুরক্ত বানিয়ে ফেলেছে, প্রভাবক জায়গা থেকে যেভাবে আনুগত্যের জায়গায় নিয়ে এসেছে, তা রীতিমত ভাবনার বিষয়।
আসুন, আমাদের অতীত আকাবিরদের রাজনীতিটা একটু খোলাসা করি, তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার সাথে আমাদের তফাৎটা কোথায় সেটা নিয়ে পর্যালোচনা করি।
-লেখক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক।