ইমাম-খতিবদের উদ্দেশ্যে আল্লামা আহমদ শফী’র ছয়টি বিশেষ পরামর্শ
একুশে জার্নাল ডটকম
মার্চ ২৫ ২০২০, ১৯:১০
বাংলাদেশ অন্যতম একটি মুসলিম প্রধান দেশ। দেশে তিন লক্ষের অধিক মসজিদ রয়েছে। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে লক্ষ লক্ষ মানুষ অংশ নেন। মসজিদে গিয়ে অাত্মিক প্রশান্তি লাভ করেন। অাল্লাহ তায়ালার দরবারে কান্নাকাটি করেন। মসজিদের সঙ্গে রয়েছে তাদের অাত্মিক সম্পর্ক। কারণ মসজিদ হলো সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। অাল্লাহ তায়ালার দৃষ্টিতে পৃথিবীর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্থান মসজিদ। তাই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চলমান পরিস্থিতিতে দেশের সকল মসজিদের ইমাম, খতিব , মুয়াজ্জিন ও মুতাওয়াল্লীদের সমীপে ছয়টি পরামর্শ প্রদান করা হলো। অাশা করছি,পরামর্শগুলো যথাযথ অামলে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
অাজ ২৫ মার্চ বুধবার সন্ধ্যা ৬ টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, অামীরে হেফাজত অাল্লামা শাহ অাহমদ শফী ছয়টি পরামর্শ প্রদান করেন।
এক. অামাদের দেশের জনগণ করোনাভাইরাস ইস্যুতে এখনো পরিপূর্ণ সচেতন নন। এমন নাজুক পরিস্থিতিতেও ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ তোয়াক্কা করছেন না। অথচ এ পরিস্থিতিতে অামাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন অাল্লাহমুখী হওয়া। কারণ তওবা ইসতেগফার ও কান্নাকাটির মাধ্যমে অাল্লাহ তায়ালার অাজাব ও গজব থেকে অামরা বাঁচতে পারবো। তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে বিশেষ মুনাজাত করুন। তওবা ইসতেগফার করুন। সুন্নাতসম্মত দোয়ার অামল করুন।
দুই. বাংলাদেশে লকডাউন ঘোষণা হলে ইমাম মুয়াজ্জিন ও খাদেমগণ মিলে হলেও নামাজের জামাত কায়েম করতে হবে। মসজিদ বন্ধ করা যাবে না। তবে সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে অাদায় করার প্রতি মুসল্লিদের তাকিদ দিন। অার সতর্কতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব অামল চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
তিন. দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে দিনমজুর ও সমাজের নিম্নবিত্তের মানুষ। তাই ইমাম খতিব, মুয়াজ্জিন ও মসজিদ কমিটির দায়িত্বশীলগণ তাদের সহায়তায় এগিয়ে অাসুন। সমাজের বিত্তশালীদের সঙ্গে পরামর্শ করে অসহায় মানুষদের হাতে চাল,ডাল,তেল,অালুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিন।
চার. মসজিদে মসজিদে অজুর অাগে হাত ধোয়ার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার এর ব্যবস্থা করুন। ফরজ নামাজ ও জুমার বয়ানে সংক্ষিপ্ত আকারে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অালোচনা করুন। গুজব, কানকথা, ভিত্তিহীন ও তথ্যহীন অালোচনা থেকে বিরত থাকুন। বিদেশ ফেরত ও অসুস্থ ব্যক্তিদের মসজিদে না এসে তাদের ঘরে নামাজ অাদায়ের নির্দেশ দিন।
পাঁচ. প্রত্যেক মহল্লার ইমাম ও সচেতন উলামায়ে কেরাম প্রত্যেকেই নিজ দায়িত্বে দোয়া ইউনুস, কোরআন খতম ও রোগমুক্তির জন্য বিশেষ দোয়ার অামল করুন।
“লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনজ জালিমিন।”
এই আয়াত সবাইকে বেশি বেশি পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন।
এবং ঘর থেকে বের হওয়ার অাগে
“বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআস মিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়া হুওয়াস সামিউল আলিম।’ উক্ত দোয়াটি নিয়মিত পড়তে বলুন।
ছয়. কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার কাফন দাফনের ব্যবস্থা ও জানাযা পড়ানোর ব্যাপারে গাফলতি করবেন না। নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে যথেষ্ট সম্মান দিয়ে নিয়মমাফিক সবকিছুর অাঞ্জাম দেয়ার চেষ্টা করবেন।
বার্তাপ্রেরক
মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী
প্রচার সম্পাদক : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ