আজান শুনে ক্ষেপে গেলেন আওয়ামীলিগ নেতা
একুশে জার্নাল
মার্চ ২৯ ২০১৮, ০৫:৩০
একুশে জার্নাল সিলেট বালাগঞ্জ:
অনুষ্টান চলাকালীন নিজের বক্তব্যের মাঝখানে আজান শুরু হওয়ায় ক্ষেপে উঠেন সিলেট বালাগঞ্জের আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আনহার মিয়া।
উনার এই ক্ষেপে যাওয়ার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় সারাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এমনকি স্থানীয় আওমীলীগ নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ কর্মীরা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক দ্বায়িত্বশীল বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে বিব্রত এরকম ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজান নিয়ে এরকম মন্তব্য করা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মুরব্বী বলেন, যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিধর্মী হয়েও আজানের সময় তার বক্তব্য বন্ধ রাখেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও আনহার মিয়ার নেত্রী শেখ হাসিনাও যেখানে আজানকে সম্মান করেন সেখানে তার এরকম মন্তব্য ধর্মপ্রাণ মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে। যা আগামী নির্বাচনে আনহার মিয়া ও তার দলের জন্য ক্ষতির কারন
হবে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, বালাগঞ্জ স্থানীয় নতুন বাজারে একটি ক্রীড়া প্রতিযোগীতা ও আলোচনা সভা চলছিল। সভা চলাকালিন সময়ে পাশের মসজিদে যোহরের আজান দেন মসজিদটির ইমাম
আনহার আলীর বক্তৃতা চলাকালীন পাশের মসজিদ থেকে জোহরের আজান শুরু হয়। এতে উপস্থাপক তাকে বক্তব্য স্থগিত করতে অনুরোধ করেন।
তারপরই তিনি ক্ষেপে উঠেন আজান নিয়ে, আনহার মিয়া সিলেটি ভাষায় বলেন ‘আদিলকিলামি করইন, কোনখান মিটিং মাটিং দেখলে তারা দেওয়ানা হইযায় আজান দেওয়ার লাগি। কেনে, আজান দুই মিনিট আগে দিল অখানর জওয়াপ দিত হইব। কেনে দুই মিনিট আগে আজান দিল, অনুষ্টান দেখলে দেওয়ানা হই যায়।’
এর পর তিনি মাইক হাতে নিয়ে বলেন, ‘আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে যেকোন জাতীয় অনুষ্টানে আজান দিয়ে বাধা দেয়া হয়। এর কারন হচ্ছে অনুষ্টানে বাধাঁ দেয়া। কোনো অনুষ্টান হলে এখানে আজানের প্রতিযোগীতা হয়। আমি মসজিদ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি, কেনো দুই মিনিট আগে আজান দেওয়া হলো আমি বুঝলামনা।’
তারপর তিনি জামাল নামে একজনকে মসজিদের ইমামকে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেন।
কে এই আনহার মিয়া?
সিলেট জেলার অন্তর্গত বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বোয়ালজুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনহার মিয়া। মধ্যবিত্ত পরিবারের আনহার মিয়া একটি ইন্সুেরেন্স কোম্পানীতে কাজ করতেন। সেই ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে কাজ করা কালীন আওয়ামীলীগের একটি অঙ্গ সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হন।
তৎকালীন যুবলীগ নেতা ফারুক মিয়ার আশীর্বাদে দলে বেশ ভালো অবস্থান করে নেন। এরপর বোয়ালজুড় ইউনিয়ন পরিষদের তখনকার চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান (আখল মিয়া) হঠাৎ মৃত্যুবরণ করলে উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার পর তার আচার আচরণে বেশ পরিবর্তন আসে। ফলে চেয়ারটি বেশীদিন ধরে রাখতে পারেন নি। দীর্ঘদিন পর গত নির্বাচেন প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী বৈতরনী পার হন।