আওয়ামী লীগ ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপ আজ
একুশে জার্নাল
নভেম্বর ০১ ২০১৮, ০৩:১১
সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে আজ বহুল প্রত্যাশিত ও কাঙ্ক্ষিত সংলাপ। গণভবনে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আলোচনায় বসবেন।
এতে শাসক দল সংবিধানের আলোকে এবং ঐক্যফ্রন্ট সাত দফাকে গুরুত্ব দেবে। সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল না দেয়ার অনুরোধ জানাতে পারেন ফ্রন্টের নেতারা। সংলাপে আ’লীগের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন নেতৃত্ব দেবেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২২ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। এর আগে ঐক্যফ্রন্টের ১৬ সদস্যের তালিকা সরকারের কাছে হস্তান্তর করে। এ রাতে দেশি এবং বিদেশিদের নজর থাকবে গণভবনের দিকে। শেষ পর্যন্ত সংলাপ সফল হয় কিনা তা দেখার অপেক্ষায় পুরো জাতি। ছাড় দিয়েও হলে দুই পক্ষকে সমাধানে পৌঁছা উচিত বলে মনে করছেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। সংলাপ সফল হবে এমন প্রত্যাশার মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার এই সংলাপকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্টজনরা। আলোচনা শেষে নৈশভোজের আয়োজন রয়েছে। এর মেন্যুতে থাকছে ড. কামালের পছন্দের চিজ কেকসহ ১৭ পদের খাবার।
তবে এ ডিনারে অংশ নেবে না ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। এ প্রসঙ্গে ফ্রন্টের নেতা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা ডিনারে অংশ নেব না। আমরা তো সংলাপে যাচ্ছি, ডিনার করতে তো যাচ্ছি না। সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে প্রধানমন্ত্রীর ডিনারে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। তাদের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি ফ্রন্টের নেতাদের জানালে তারাও এতে সম্মতি জানান।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পর শুক্রবার বিকল্পধারা বাংলাদেশের সঙ্গে বসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ নভেম্বর জাতীয় পার্টির সঙ্গে বসছেন তিনি। এছাড়া আসল বিএনপির পক্ষ থেকে কামরুল হাসান নাসিম সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন।
সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দল বা জোটের এটাই প্রথম সংলাপ। এ উপলক্ষে দু’পক্ষেরই প্রস্তুতি চূড়ান্ত। নানা কৌশল নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। সাত দফার ভিত্তিতেই আলোচনা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ সরকারের ওপরই বেশি জোর দেয়া হবে। এর পাশাপাশি সরকার চাইলে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখাও দিতে পারেন তারা। খালেদা জিয়ার সাজার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলে ধরবেন। সাত দফা দাবি না মানলে বিকল্প ভাবনাও কি হবে সেটাও চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অন্যদিকে সরকার সাত দফা দাবি এড়িয়ে ফ্রন্টকে বিকল্প প্রস্তাব দিতে পারে।
আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, আলোচনার শুরুটা সৌহার্দ্য ও শুভেচ্ছাসিক্ত হবে। আওয়ামীলীগের তরফ থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ২টি প্রশ্ন ও ৩টি প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে প্রথম সংলাপে তাদের কোনোভাবেই নিরাশ করতে চায় না আওয়ামী লীগ। নির্বাচন নিয়ে বেশ কয়েকটি বিষয়ে সহমতে আসতে চান শাসক দলের নেতারা। আগামী নির্বাচন, নির্বাচনকালীন সরকার ও পরবর্তী সরকার নিয়ে ড. কামাল হোসেনকে তিনটি প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন সরকারে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব দেয়ার সম্ভাবনা আছে। গুরুত্বপূর্ণ ৩টি মন্ত্রণালয় দেয়ার কথা থাকতে পারে ওই প্রস্তাবে। সম্ভাবনা আছে নির্বাচন পরবর্তী ঐকমত্যের সরকারে তাদের অংশগ্রহণের প্রস্তাব দেয়ার। কাক্সিক্ষত মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নিতে চাইলে আলোচনাও করতে পারবেন আমন্ত্রিত নেতারা। আর এই দুই প্রস্তাবে সম্মতি এলে নির্বাচন ও অংশগ্রহণ নিয়ে আরেকটি সমঝোতার প্রস্তাব দেয়া হতে পারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে।
সংলাপ সফল করতে দু’পক্ষকে সহনশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেন, আলোচনার আগেই দেয়াল তোলা যাবে না। তেমনি কোনো বিষয়ে অনড় থাকা যাবে না। ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। উভয় পক্ষের সদিচ্ছা থাকলেই ভালো কিছু হতে পারে। গণমানুষের প্রত্যাশা সংলাপের মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হোক। সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হোক। আলোচনা থেকে দেশের ভালো হয় এমন কিছু বেরিয়ে আসুক। তরুণ সমাজ মনে করছেন দু’পক্ষ যেহেতু বসছে কাজেই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসার সম্ভাবনাই বেশি। তাদের মতে, উভয়পক্ষ ছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়ে বসলেই সম্মানযোগ্য সমাধান আসতে পারে।
সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে রোববার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন। মঙ্গলবার সকালে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে ড. কামালকে চিঠি পাঠান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পাওয়ার পর সংলাপের এজেন্ডা চূড়ান্ত করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন ফ্রন্টের নেতারা। সাত দফার ভিত্তিতে তারা আলোচনা করবেন। সূত্র জানায়, গণভবনে প্রবেশের পর সরকার শুরুতে ডিনারের আমন্ত্রণ জানালে তাতে সম্মতি দেবে না ঐক্যফ্রন্ট।
সূত্র জানায়, আজকের সংলাপের শুরুতেই সরকারকে আলোচনার সূত্রপাত করার অনুরোধ জানানো হবে। সরকার যেহেতু সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে তাই সংকট নিরসনে তাদের করণীয় কি তা আগে জানতে চাওয়া হতে পারে। সাত দফা দাবি নিয়ে সরকারের মনোভাব কি তা জানতে চাইবেন তারা।
সংলাপে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে কে কে বক্তব্য রাখবেন সেই ব্যাপারেও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সংলাপের নেতৃত্ব দেবেন ড. কামাল। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য রাখতে পারেন। বাকিরা তাদের সহায়তা করবে।
সংলাপে কি কি প্রশ্ন করা হতে পারে সেই ব্যাপারেও প্রস্তুতি নিয়েছেন ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। ফ্রন্টের এক নেতা জানান, বৈঠকে ড. কামালকে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হতে পারে। সংবিধান প্রণেতা হয়ে যেসব সংবিধানে নেই (সংসদ ভেঙে দেয়া ও নিরপেক্ষ সরকার) সেই দাবি কিভাবে জানাচ্ছেন- এমন কিছু জানতে চাওয়া হতে পারে। ‘সংবিধান ও আইন পরিবর্তন কোনো ব্যাপারই না, ১ মিনিটেই তা হতে পারে’- ড. কামালের সংবিধান সংশোধনের কেন এই ঘোষণা? সংলাপে তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা দাবি করতে পারে আওয়ামী লীগ। সূত্রটি বলছে, সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা হয়ে আপনি (ড. কামাল) কিভাবে সংবিধানের বাইরে কথা বলছেন? দেশে এমন কি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তাছাড়া প্রতিপক্ষ তো আন্দোলন-সংগ্রামে দেশ অবরোধ করে দাবি আদায়ে যায়নি। আরেকটি প্রশ্ন কেন এবং কি উদ্দেশ্যে আপনি সংবিধান সংশোধনের কথা বলছেন?
এমন প্রশ্ন সামনে এলে জবাবও তৈরি করছেন ড. কামাল। সংবিধানের ব্যাপারে ড. কামাল হোসেন উচ্চ আদালতের রায়ের বিষয়টি উপস্থাপন করতে পারেন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল সংক্রান্ত রায়ে আরও দুটি নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে পারে বলে যে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে সেই বিষয়টি উল্লেখ করতে পারেন তিনি। এছাড়া ফ্রন্টের পক্ষ থেকে যে দাবি করা হয়েছে সেজন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই। সংশোধনীর সংশোধন করলেই হবে। অনেক তুচ্ছ ঘটনায়ও সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে উল্লেখ করে, জাতির স্বার্থে প্রয়োজনে সংবিধানের সংশোধনীর সংশোধন আনা যেতে পারে বলে মত দিতে পারেন ড. কামাল।
জানতে চাইলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বুধবার যুগান্তরকে বলেন, সংবিধানের মধ্যে থেকেই সমাধান সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন কেবল সদিচ্ছা এবং আন্তরিকতা। তিনি বলেন, ‘অতীতে বারবার প্রমাণিত হয়েছে. দলীয় সরকারের অধীনে ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হয় না। তাই আমরা সাত দফা দিয়েছি। আমরা মনে করি সাত দফার ভেতরেই সমাধান আছে।’ ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘মানুষ এখন হিংসার রাজনীতি করতে চায় না।’
প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পাওয়ার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ফ্রন্টের নেতারা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সেখানে অনেক বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। ফ্রন্টের শীর্ষ এক নেতা বিএনপি প্রতিনিধি দলের কাছে বেশ কিছু প্রশ্ন রেখে তাদের মতামত জানতে চান। সরকার শেষপর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়টি মেনে না নিলে সেক্ষেত্রে ফ্রন্টের ভূমিকা কী হবে, এ ব্যাপারে বিএনপির মতামত জানতে চাওয়া হয়। এ ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
সংলাপে বিএনপির পক্ষ থেকে কী কী বিষয় তুলে ধরা হবে, সে ব্যাপারে দলের নীতিনির্ধারকরা দফায় দফায় বৈঠক করেন। ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের মতামতও নেয়া হয়। সূত্র জানায়, দেশের সংকটময় পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে এ থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাওয়া হবে। অতীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে অনুষ্ঠিত সংলাপের বিষয়টিও উত্থাপন করতে পারেন ফখরুল। বিশেষ করে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সংলাপের প্রসঙ্গটিও তুলে ধরতে পারেন মির্জা ফখরুল। সংবিধানের ধারাবাহিকতার স্বার্থে দশম নির্বাচন করার পরই সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ নির্বাচন করা হবে- আওয়ামী লীগের এমন প্রতিশ্র“তির কথাও স্মরণ করিয়ে দেবেন তিনি।
সূত্র জানায়, অনেকটা ধৈর্যের সঙ্গে পুরো সংলাপটি শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। সরকারি দলের কোনো নেতার উসকানিমূলক বক্তব্যে পা দেবে না তারা।
সূত্র জানায়, বিএনপি ও ফ্রন্টের নেতারা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি- সাত দফার দুই-তিনটি দফায় ফ্রন্ট অনড় থাকবে। বিশেষ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে তারা কোনো ছাড় দেবে না। সংবিধানের ভেতর থেকেও তা সম্ভব বলে সংলাপে দাবি জানানো হবে।
সূত্র জানায়, সরকার শেষপর্যন্ত সংবিধানের দোহাই দিয়ে অনড় থাকলে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের নতুন ফর্মুলাও দেয়া হতে পারে। সে বিষয়টি নিয়ে তারা ইতিমধ্যে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। সংবিধানের ভেতর থেকে সবাইকে নিয়ে কিভাবে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা সম্ভব সে ব্যাপারে একটি রূপরেখাও চূড়ান্ত করেছে ঐক্যফ্রন্ট। সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই রূপরেখা তুলে দেয়া হতে পারে।
এদিকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা জানান, সংলাপের নানা বিষয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তারা আলোচনা করেছেন। ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার কয়েকটিতে আপত্তি ও তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এতে দেখা গেছে ১, ২, ৩ ও ৫নং দাবিতে তাদের অনেক আপত্তি রয়েছে। তবে ৪, ৬ ও ৭নং দফা নিয়ে যৌক্তিক আলোচনা হতে পারে। ৪, ৬ ও ৭নং দাবির অংশবিশেষ বাস্তবায়নও হতে পারে বলে জানায় সূত্রটি।
জানতে চাইলে ১৪ দলের মুখপাত্র, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সংবিধানের বাইরে আলোচনা করলে কোনো লাভ হবে না। যা কিছু কথা সংবিধানের ভেতরে থেকেই করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের ২২ ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন সংলাপে : আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রাধনমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আজকের সংলাপে ১৪ দলীয় জোটের ২২ জন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। বুধবার আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সংলাপে উপস্থিত থাকবেন। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্লাহ এবং ড. আবদুর রাজ্জাক আলোচনায় অংশ নেবেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং আইন সম্পাদক শ. ম. রেজাউল করিমও থাকছেন এ সংলাপে। ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদ একাংশের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জাসদ আরেক অংশের কার্যকরী সভাপতি মাঈনুদ্দীন খান বাদল সংলাপে অংশ নেবেন।
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নেবেন। বাকিরা হলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার মুহম্মদ জমিরউদ্দিন সরকার এবং মির্জা আব্বাস। জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির পক্ষে সংলাপে প্রতিনিধিত্ব করবেন তিনজন। তারা হলেন- দলটির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সহসভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন। গণফোরামের নেতাদের মধ্যে থাকবেন দলটির নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। নাগরিক ঐক্যের পক্ষে থাকবেন দলটির উপদেষ্টা এসএম আকরাম ও আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ ও আ ব ম মোস্তফা আমিন। এছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও অংশ নেবেন সংলাপে।
নৈশভোজের মেন্যু : আজ সংলাপে অংশ নেয়া নেতাদের পছন্দের খাবার দিয়ে নৈশভোজের টেবিল সাজানো হবে। এ লক্ষ্যে আগেই নেতাদের পছন্দের খাবারের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। আয়োজনের কমতি রাখেনি গণভবন। অনেকটা রাজসিক আয়োজন ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ড. কামালের বিশেষ পছন্দের খাবার চিজ কেকসহ ১৭ ধরনের খাবার দিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আপ্যায়ন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ চিজ কেক আনা হচ্ছে হোটেল র্যাডিসন থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী-১ (এপিএস-১) এবং প্রটোকলের চৌকস কর্মকর্তারা এসব খাবার প্রস্তুতের তদারকি করছেন। খাবারের ব্যবস্থাপনায় থাকছে পর্যটন কর্পোরেশন। খাবারের মেন্যুতে থাকছে পিয়ারু সর্দারের মোরগ পোলাও, চিতল মাছের কোপ্তা, রুই মাছের দো-পেঁয়াজা, চিকেন ইরানি কাবাব, বাটার নান, মাটন রেজালা, বিফ শিক কাবাব, মাল্টা, আনারস, জলপাই ও তরমুজের ফ্রেশ জুস, চিংড়ি ছাড়া টক-মিষ্টি স্বাদের কর্ন স্যুপ, চিংড়ি ছাড়া মিক্সড নুডলস, মিক্সড সবজি, সাদা ভাত, টক ও মিষ্টি উভয় ধরনের দই, মিক্সড সালাদ, কোক ক্যান এবং চা ও কফি।