আওয়ামীলীগ নিয়ে সেদিন যা বলেছিলেন আল্লামা আহমদ শফী

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ০২ ২০১৮, ২৩:২৪

আবির আবরার: গতকাল (০১অক্টোবর২০১৮) চট্টগ্রামের দারুল উলূম হাটহাজারীতে বিগত আল হাইআতুল উলয়ার পরীক্ষায় কৃতী ছাত্রদের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি নাতিদীর্ঘ এক বক্তব্য প্রদান ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ৷ তাঁর বক্তব্যে আল হাইআতুল উলয়ার মাধ্যমে কওমী মাদরাসা সর্বোচ্চ স্তরের ক্লাস দাওরায়ে হাদীসকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্ট্যাডিজ ও আরবী সাহিত্য) এর সমমান প্রদান করায় তিনি শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন ৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে পাওয়া তাঁর বক্তব্যটি একুশে জার্নাল এর পাঠকদের জন্য নিচে হুবহু তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো-

“ভাল করে লেখাপড়া করেন, শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেন। শেখ হাসিনা বোধ হয় আমেরিকা থেকে আইসা গেছে। আমরা দোয়া করতেছি, আমাদেরকে বিরাট উপকার করেছেন উনি। উনি আমাকে কথা দিছেন স্বীকৃতি দিবে, কত জনে কত কথা বইলছে, ঐদিকে লক্ষ্য করেন নাই। আমি দেওয়ার জন্য ওয়াদা করেছি, সনদের স্বীকৃতি আমি দেবই দেব। দিয়ে দিছে শেষ ফল, কারও কথার দিকে লক্ষ্যপাত করেননি। তো, সেজন্য ওনারও শুকরিয়া আদায় করতেছি আমি, শেখ হাসিনার শুকরিয়া আদায় করতেছি।

কেউ কেউ বলে আমি আওয়ামীলীগ হয়ে গেছি। ‘কমবখত’ মিথ্যা কথা বলতেছ। ওনি আমাকে এমনিতেই ডাইকা দিয়ে দিছে। আমি আওয়ামীলীগ হই নাই। ঐটা আপনাদের ভুল। কথাবার্তা বলতেছেন, কথাবার্তা বলার সময় মিথ্যা কথা, সত্য কথা যাচাই করে বলবেন। কি করে বলতেছেন আমি আওয়ামীলীগ হয়ে গেছি? আওয়ামীলীগ হইয়া গেলেও কোন আপত্তি নাই। আওয়ামীলীগের মধ্যে এমন এমন মানুষ আছে, যারা দ্বীনকে ভালবাসে, আমাদেরকে মোটা অংকে মাদ্রাসায় সাহায্য করে। মোটা অংকে সাহায্য করে। সেজন্য ওনি আওয়ামীলীগ, ওনি বিএনপি, ওনি এই-এই কথা বইলা বইলা তোমরা আল্লার কাছে কি জবাব দিবেন আমাকে বলেন? খায়ের, আমি আর ওয়াজ করতেছি না। শেখ হাসিনার শুকরিয়া আদায় করতেছি…

এর আগে তিনি আরও বলেছেন,
“প্রত্যেকে দোয়া করবো নিজের জন্য, নিজের মাতা-পিতার জন্য আর বিশেষ করে শেখ হাসিনার জন্য। সনদের স্বীকৃতি বেলাশক (কোন সন্দেহ ছাড়া) আমি যেভাবে লিখেছি তার মধ্যে কোন রকমের ভেজাল করে নাই। যেভাবে বলছে ওনি আমাকেই বলছে সনদের স্বীকৃতি দিতে আবার আমি যেভাবে লিখেছি তার মধ্যে একটা নোকতাও বেশি কম করে নাই। এটা কওমী মাদ্রাসার জন্য বড় নেয়ামত। এটার জন্য আমাদের মুরব্বিয়ানে কেরাম বহু আগে পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন। তারা এ সনদ লাভ করতে পারে নাই। সরকারে দেয় নাই। এখন আল্লার রহমত আমাকে ডাইকা এই সনদের স্বীকৃতি আর কাউকে দেন নাই। আমাকেই একমাত্র দিয়েছে। কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে বলতেছি, আপনারা এই হাইআতুল উলইয়ার মধ্যে পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনাদের এই হাইআতুল উলইয়া এম.এ মানের সমতুল্য। আপনারাও বড় বড় ডিগ্রি লাভ করতেছেন মনে করবেন। চাকরিও পাবেন পেপারে। আপনারা এম.এ পাশ যারা হইতেছে এদের সমান আপনাদেরও মূল্য। আগে আপনারা গোপনে গোপনে সরকারি মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিতেন। এখন সরকারি ওয়ালারাও আপনাদের এখানে এসে পরীক্ষা দিবে। কত বড় লাভবান হয়েছেন আপনারা। সেজন্য আপনাদের বলতেছি আপনারা ভাল করে লেখাপড়া করেন।”
পরে তিনি মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করেন।