অবশেষে গ্রেফতার হলো শরীয়তপুরের দুর্ধর্ষ ৭ চোর

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

অক্টোবর ২৩ ২০২০, ১৮:২৪

ইয়ামিন কাদের নিলয়, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি: অর্ধশতাধিক চুরির পর শরীয়তপুরের ঘটনায় গ্রেফতার দুর্ধর্ষ ৭ চোর বিভিন্ন জেলায় ৫০ টিরও বেশি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। আন্ত:জেলা চোর চক্রের এই সদস্যরা শরীয়তপুরেও তেমনি দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে গত ৫ অক্টোবর থেকে। শহরের পালং উত্তর বাজারে স্মার্ট গ্যালারী নামের একটি মোবাইল ফোনের শো-রুম থেকে প্রায় ২৪ লাখ টাকার ১৬২টি মোবাইল ফোন চুরি করে তারা। মার্কেটের প্রধান ফটক ও মোবাইলের দোকানের তালা কেটে দুর্ধর্ষ কায়দায় চুরি করে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। সিসি ক্যামেরার লেন্সে ধরা পরে তারা। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে চোর চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে শরীয়তপুর জেলা পুলিশ।গতকাল বেলা ১১টায় শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘটনার এসব বিবরণ তুলে ধরা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এস.এম আশরাফুজ্জামান জানান, গত ৫ অক্টোবর ভোরে জেলা শহরের পালং উত্তর বাজারে সেমন্ত ঘোষের মর্ডান স্মার্ট গ্যালারী নামক মোবাইল শো-রুম থেকে প্রায় ২৪ লাখ টাকা মূল্যমানের ১৬২টি মোবাইল চুরি হয়। এই বিষয়ে পালং মডেল থানায় ওই দিনই একটি মামলা করা হয়। পালং থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে চোরচক্রের সদস্য মো. মিলনকে কুমিল্লার লাঙ্গলকোট থেকে, মো. রফিককে চাঁদপুরের কচুয়া থেকে, মতিন/মতি/মইত্যাকে কুমিল্লার সদর থেকে, ইব্রাহিম ইসলাম/নয়ন সাহাকে চট্টগ্রামের অলংকার বাস টার্মিনাল থেকে, মোকারম হোসেন/ মনির/মোনু/রুবেলকে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বস্তামি থানা থেকে, মানিক মিয়াকে কুমিল্লার চৌরাস্তা থেকে ও মো. মকবুল হোসেনকে কুমিল্লার মুরাদ নগর থেকে গ্রেফতার করে। এই সময় তাদের কাছ থেকে চোরাই কাজে ব্যবহৃত কাটার ও ১টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়।পুলিশ সুপার বলেন, চোরচক্রটি ঘটনার পূর্বের রাতে শহরের চন্দ্রা রেস্ট হাউজে নিজেদের ছদ্মনাম ও ভুয়া মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে অবস্থান করে। রাত শেষে ভোরের দিকে তারা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে মোবাইল মার্কেটের প্রধান ফটকের তালা এবং মোবাইল দোকানের তালা কেটে দোকানে প্রবেশ করে। পরে দোকান থেকে ১৬২টি দামী মোবাইল ফোন চুরি করে নেয়। চুরির সময় মোবাইল ফোনে কথা বলার ছলে পাহারা দেয় মানিক, লুঙ্গি দিয়ে আড়াল করে রাখে নয়ন সাহা/ইব্রাহীম, দোকানের তালা কাটে রফিক ও মতিন/মতি/মইত্যা। ধৃত আসামীরা প্রাথমিক ভাবে চুরির ঘটনার স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

পুলিশ সুপার আরো জানান, কুমিল্লায় বসে তারা চুরির এই সিদ্ধান্ত নেয়। শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে আসামী রফিকের খালা বাড়ি। খালা বাড়ি যাওয়ার পথে তারা এই ঘটনা ঘটায়। ঝিনাইদহ, কুমিল্লা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলায় এই পর্যন্ত ৫০টিরও বেশী চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। তাদের টার্গেট থাকে মোবাইল, স্বর্ণ ও বিকাশের দোকান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম মিজানুর রহমান এর নেতৃত্বে অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল আলম ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই পল্লব কুমার সরকার সহ পুলিশের একটি টিম।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা না থাকলে এই চোরচক্র ধরা সম্ভব হতো না। আমি সকল হাট-বাজার সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার জন্য অনুরোধ করব। খুব শীঘ্রই আমরা শরীয়তপুরকে অনলাইন সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসব।

প্রেস ব্রিফিংএ উপস্থিত ছিলেন, পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আসলাম উদ্দিন, ডিআইও-১ আজহারুল ইসলাম সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাগণ।