দীনি মাহফিল রহমত ও বরকত প্রাপ্তির মাধ্যম: আল্লামা মাহমুদুল হাসান

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ২৬ ২০১৯, ১৩:০৬

ইলিয়াস মশহুদ: দীনি মাহফিল হলো রহমত ও বরকত প্রাপ্তির মাধ্যম বলে মন্তব্য করেছেন মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির ও জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ির প্রিন্সিপাল মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

তিনি বলেন, দীনি মাহফিল হলো রহমত ও বরকত প্রাপ্তির মাধ্যম। এটাকে নষ্ট করার জন্য শয়তান মানুষকে কৌশলে গুনাহ করায়। যাতে এর বরকত বিনষ্ট হয়ে যায়। এখন মারাত্মক একটা গুনাহের চর্চা শুরু হয়েছে ছবি উঠানোর মাধ্যমে।

সিলেটের শীর্ষ ইসলামী বিদ্যাপীঠ ঐতিহ্যবাহী জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার শতবার্ষিকী ও ৩ দিনব্যাপী দস্তারবন্দী মহাসম্মেলনের প্রথম দিন (২৫ ডিসেম্বর) বুধবার আল্লামা মাহমুদুল হাসান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ছবি তোলা এতো মারাত্মক গুনাহ যে, শাহ ওলীউল্লাহ রহ. বলেন, পৃথিবীতে প্রথমত শুধু তাওহীদ ছিলো, কোনো শিরক ছিলো না, অতঃপর ছবির মাধ্যমে শিরকের সূচনা হয়েছে। যে কারণে ছবি নির্মাতাকে কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, এই গুনাহের কাজ দূরীকরণে উলামায়ে কেরামকে প্রদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ, নবী আলাইহিস সালাম পৃথিবীতে মানুষকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যে চারটি কাজ নিয়ে এসেছিলেন, এর তিনটি হলো সরাসরি ইলমে ওহির সাথে সম্পৃক্ত। আর ওহির মাধ্যমে মানুষ যখন নেক আমল শুরু করে, তখন সেই আমল নষ্ট করার জন্য শয়তান নেক ছুরতে কিছু মন্দ আমল, এর ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়। তখন আমলগুলো নষ্ট হতে থাকে।

‘আমল আমলের পরিশুদ্ধির দরকার হয়, আর পরিশুদ্ধির নাম হলো তাযকিয়া, এই তাযকিয়া হলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চতুর্থ নম্বর দায়িত্ব। যে দায়িত্ব এখন তাঁর ওয়ারিশ হিসেবে উলামায়ে কেরামকে আদায় করতে হবে।, যোগ করেন আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন জামেয়ার মুহতামিম ও সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান।

জামেয়ার ফাযিল মাওলানা কবির আহমদ খানের সঞ্চালনায় বিভিন্ন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন খরিফায়ে মাদানী আল্লামা আব্দুল মোমিন শায়খে ইমামবাড়ি, জামেয়ার সরপরস্ত মাওলানা শামছুল ইসলাম খলীল, আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, জামেয়ার ছানী শায়খুল হাদিস আল্লামা নযীর আহমদ ঝিঙ্গাবাড়ি, আল্লামা আলিমুদ্দিন শায়খে দুর্লভপুরী, মাওলানা মুজিবুর রহমান আঙ্গুরা মাদরাসা।

সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান রাখেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতী মুশতাকুন্নবী, মুফতি নোমান কাসেমী প্রমুখ।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা হাসান মাদানী ভারত, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুফতী লুৎফুর রহমান কাসিমী, নাযির হুসাইন প্রথমপাশী, মাওলানা আব্দুল হক লক্ষীপাশী প্রমুখ।

জামেয়ার দীর্ঘ ৫৩ বছরের সাড়ে তিনহাজার আলিম ও হাফিয ফাযিলেরর মধ্যে গতকাল বুধবার (১ম দিন) ১৩৮৮ থেকে ১৪২৬ হিজরীর আলিম ফারিগীন এবং সকল আবনার মাথায় দস্তারে ফজিলত প্রদান করা হয়।

বাদ মাগরিব সম্মেলনের ৩য় অধিবেশনে জামেয়ার দস্তারবন্দী মহাসম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত হাজার পৃষ্ঠার স্মারকগ্রন্থের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আল্লামা আব্দুল মোমিন শায়খে ইমামবাড়ী, আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান, স্মারকের প্রধান সম্পাদক মাওলানা মুখলিসুর রহমান রাজাগঞ্জী, মাওলানা মুশাহিদ কাসিমী, মাওলানা এহতেশাম কাসিমী, মাওলানা শামসীর হারুন, কবির আহমদ খান, ইবাদ বিন সিদ্দিক প্রমুখ।