ভারতের মুসলিমরা গণহত্যা থেকে মাত্র একধাপ দূরে : ড. স্ট্যানটন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ১৫ ২০১৯, ১৯:১৩

ভারতের মুসলিমরা গণহত্যা থেকে মাত্র একধাপ দূরে রয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য ও জেনোসাইড ওয়াচের প্রেসিডেন্ট ড. গ্রেগরি স্ট্যানটন এ মন্তব্য করেছেন। তার মতে, ভারতে নিশ্চিতভাবেই গণহত্যার প্রস্তুতি চলছে।

১২ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার কাশ্মীর ও এনআরসি নিয়ে কংগ্রেসনাল ব্রিফিংয়ে স্ট্যানটন এসব কথা বলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য উইক ও ইন্ডিয়া টুডে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে।

মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসনাল ব্রিফিংটির আয়োজন করে তিনটি সংগঠন। সংগঠন তিনটি হলো- ইন্ডিয়ান আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল, এম্বেজ অ্যাকশন এবং হিন্দুজ ফর হিউম্যন রাইটস।

ড. গ্রেগরি স্টানটোন বলেন, ‘আসাম ও কাশ্মীরে মুসলিমদের ওপর যে মাত্রায় নির্যাতন চলছে, তা হলো গণহত্যা শুরুর আগের পর্ব। এর পরের ধাপই হলো বিপুল আকারে হত্যা ও নির্মূলকরণ- যাকে আমরা গণহত্যা বলে থাকি।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনে নাৎসি শাসন ব্যবস্থার ছাপ রয়েছে উল্লেখ করে স্ট্যানটন বলেন, ‘জাতীয়তাবাদ অতিমাত্রায় ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদে রূপ নিয়েছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, আসামে মুসলিমদের নির্মূলকরণের প্রেক্ষাপট নির্মাণ করা হচ্ছে। আসাম ও কাশ্মীরের ঘটনাকে তিনি ক্লাসিক কেস (ধ্রুপদি উদাহরণ) হিসেবে উল্লেখ করেন।

স্ট্যানটন গণহত্যার ১০টি ধাপ বর্ণনা করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ পরিচিত। কংগ্রেসনাল ব্রিফিংয়ে আসাম ও কাশ্মীরের সাথে ওই ধাপগুলোর মিলও তুলে ধরা হয়।

ধাপগুলো হলো- ১. ‘আমরা বনাম তোমরা’ বিভাজন তৈরি করা, ২. প্রতিকীকরণের মাধ্যমে ঘটনার শিকার মানুষদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা, ৩. বৈষম্যকরণ। নাগরিকত্ব বাতিল, আইনি অধিকার বাতিলসহ বিভিন্ন বৈষম্য তৈরি করা, ৪. অমানবীয় পরিস্থিতিতে ফেলা, ৫. গণহত্যার জন্য সংগঠন তৈরি করা। কাশ্মীরে সেটি সেনাবাহিনী আর আসামে নাগরিক পঞ্জি তৈরিকারী সংগঠন, ৬. প্রপাগান্ডার মাধ্যমে মেরুকরণ করা, ৭. প্রস্তুতি সম্পন্ন করা, ৮. নির্যাতন-নিপীড়ন, ৯. নির্মূলকরণ এবং শেষধাপ ১০. প্রত্যাখ্যান বা অস্বীকার।

ব্রিফিংয়ে ভিডিওর মাধ্যমে যুক্ত হন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. অঙ্গনা চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট মোদি সরকার কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই অঞ্চলটি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

কাশ্মির উপত্যকা ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা জম্মু-লাদাখ অঞ্চলে ১৩২ দিন ধরে ধারাবাহিকভাবে ভয়ানক অবস্থা বিরাজ করছে। ওই অঞ্চলে ব্যাপক সংখ্যক ভারতীয় সেনা সদস্য মোতায়েনের পরেও ১৪৪ ধারায় জারি করা নিষেধাজ্ঞা গুলো তুলে নেয়া হয়নি।

ইন্টারনেট, মোবাইলে বার্তা পাঠানো এবং পোস্ট পেইড সংযোগগুলো ওই স্থানে এখনো বন্ধ রয়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে ল্যান্ড ফোন এবং পোস্ট পেইড মোবাইলে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হলেও তা জন দুর্ভোগ লাঘবে যথেষ্ট নয়।

৫ আগস্টের পর থেকে কাশ্মির উপত্যকায় সামরিক নিয়ন্ত্রণের ফলে খুবই কষ্টভোগ করছে সাধারণ মানুষ। কিন্তু বৃষ্টিপাতের পর শৈতপ্রবাহ ও তুষারপাত জনগণের দুদর্শাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।

অবরুদ্ধ থাকার কারণে, শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়েতে কঠোর শীতের জন্য প্রযোজনীয় পণ্যদ্রব্য মজুদ করতে পারেনি। যা তারা প্রতি বছরই করতো। তুষারপাতের কারণে অঞ্চলের ওই অংশটুকু এই সময় জুড়ে বন্ধ থাকে।