১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ১৫ ২০১৯, ১২:২৮

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠনে পাকিস্তানি বাহিনীকে যারা সহযোগিতা করেছিলেন এমন ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের নামসহ তালিকার প্রথম পর্ব প্রকাশ করা হয়েছে।

মহান বিজয় দিবসের একদিন আগে রবিবার রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক। এটি রাজাকারের তালিকার প্রথম পর্ব বলে জানানো হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল। তখন যুদ্ধরত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করতে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছিল।

প্রথমে এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটির অধীনে থাকলেও পরে একে আধা সামরিক বাহিনীর স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার।

একই রকম আধা সামরিক বাহিনী ছিল আল বদর বাহিনী ও আল শামস বাহিনী। তবে স্বাধীনতাবিরোধী এই বাহিনীগুলোকে সাধারণ অর্থে রাজাকার বাহিনী হিসেবেই পরিচিত বাংলাদেশে।

প্রায় এক দশক আগে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর রাজাকারের তালিকা তৈরির দাবি উঠলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।

দীর্ঘদিন ধরে চলে আসার দাবির মুখে ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, রাজাকারের কোনো তালিকা সরকারের কাছে নেই। তবে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের খুলনায় আনসার হেডকোয়ার্টার্সে পাওয়া তালিকায় ৩০ হাজারের বেশি রাজাকারের তথ্য মিলেছিল। ওই তালিকাটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রয়েছে।

মে মাসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা যায়, কমিটির আগের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা ও মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়।

রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি ও সংগঠন এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সদস্যদের দেশদ্রোহী আখ্যায়িত করে তাদের আসনগুলো অবৈধভাগে শূন্য ঘোষণা করে তাদের স্থলে যাদেরকে সদস্য করা হয়েছিল, তাদের নামগুলো স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত ও সংরক্ষণে আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে ওই কার্যপত্রে দেখা যায়।

দীর্ঘন ধরে করে আসা দাবি অবশেষে প্রথমবারের মতো আলোর মুখ দেখে রবিবার। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সংবাদ সম্মেলন করে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের একটি তালিকা প্রকাশ করেন।

রাজাকারদের বিস্তারিত তালিকা https://molwa.gov.bd/ এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

তালিকা প্রকাশের সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, জামায়াতে ইসলামীসহ স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় থাকায় সময় অনেক রেকর্ড সরিয়ে ফেলেছে।