‘মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা’

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ১৬ ২০১৯, ১৯:৩৪

আমরা সর্বস্তরে ইনসাফ, ঐক্য ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে চাই বলে জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল (১৫ ডিসেম্বর) রোববার দেয়া যৌথ বিবৃতিতে দলের সভাপতি আল্লামা আব্দুল মু’মিন শায়েখে ইমামবাড়ি ও মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এ কথা জানান।

তারা বলেন,  আজকের এই দিনে শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের, যাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছি। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত ও জান্নাত কামনা করছি। স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশিদার রাজনৈতিক দল হিসেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর প্রতিটি নেতাকর্মী অত্যন্ত গৌরব ও সম্মানিতবোধ করে থাকে।

নেতৃদ্বয় বলেন, আজ থেকে ঠিক ৪৮ বছর পূর্বে এদেশের সর্বস্তরের জনতা পশ্চিম পাকিস্তনী স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে ছিনিয়ে আনে বিজয়ের রক্তিম সূর্য, প্রতিষ্ঠিত হয় আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ। বিজয় দিবস বাঙালির জাতীয় জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় এক উজ্জ্বল ঘটনা। তবে আমাদের এই বিজয় কেবল একটি জাতীয় পতাকা বা স্বাধীন একটি ভূখন্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বৈষম্যহীন ইনসাফপূর্ণ এক বিশ্ব গঠনের প্রেরণা এই বিজয়।

মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। সুদীর্ঘ ৪৮ বছর একটি জাতির জন্য কম সময় নয়। কিন্তু এই সুদীর্ঘ সময়ে দেশের মানুষ যে জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিল সেই বাক স্বাধীনতা, সেই ভোটাধিকার, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, জন নিরাপত্তা, দুর্নীতিমুক্ত সরকার ও সমাজ আজও প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। প্রতিষ্ঠিত হয়নি মানুষের মৌলিক অধিকার।

আমাদের শাসকরা এখনো পর্যন্ত জনগণের বন্ধু হয়ে উঠতে পারেনি। ব্যক্তি স্বার্থ ও দলীয় মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করা নেতার শাসন এখনো অধরাই রয়ে গেল। জবরদস্তিমূলক ক্ষমতা দখল, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনা, সর্বত্র দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম, দলীয় মাস্তানী, শিক্ষাখাতের বেহাল পরিস্থিতি, ভোগবাদ ও অনৈতিকতার ছড়াছড়ি স্বাধীনতার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করছে। দেশজুড়ে মাদক, অপসংস্কৃতি ও ভোগবাদের ছড়াছড়ি তরুণ সমাজকে অন্ধাকার জগতে ঠেলে দিচ্ছে।

যৌথ বিবৃতিতে জমিয়ত শীর্ষ নেতৃদ্বয় আরো বলেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, রাজনৈতিক সহনশীলতা এবং সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা, সর্বোপরি একটি সোনার বাংলা অর্জনের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষে দেশপ্রেমিক জনতা যে সংগ্রাম করেছিল, সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। আমরা বিশ্বাস করি মত পার্থক্য, আদর্শের ভিন্নতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দেশের উন্নতির স্বার্থে সবাইকে একযোগে কাজ করার কোন বিকল্প নেই। আর তা না করতে পারলে আরও ৪৮ বছর পরেও আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবো না।

আমরা দৃঢ় মনে বিশ্বাস করি, আমাদের তরুণ ছাত্রসমাজই সমৃদ্ধ দেশ গড়ার মূল কারিগর। যদি আমরা এই ছাত্রসমাজকে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে যে লাল-সবুজের পতাকা আমরা পেয়েছি তার প্রকৃত সুখ আমরা মনুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।