১৭ কোটি মানুষ কি এখন পদক ধুয়ে পানি খাবে? : মির্জা আব্বাস

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

অক্টোবর ০৬ ২০১৯, ১৬:৪৩

১৭ কোটি জাতির হাতে জুটলো একটি মাত্র ঠাকুর পুরস্কারের মোয়া। দুই তরফা বৈঠকে একতরফা চুক্তি, তরল গ্যাস, চট্টগ্রাম মংলা বন্দর, ফেনী নদীর পানিও যাবে ভারতের ত্রিপুরার সাব্রুম শহরে।

কথা ছিল মৃতপ্রায় তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে আসবেন, উল্টো পানি দিয়ে আসলেন! শুধু কি পানি? তরল গ্যাস, একাধারে চট্টগ্রাম আর মংলা সমুদ্রবন্দর, গভীর সমুদ্রের গ্যাস ব্লক, করিডরসহ অজানা আরও অনেক কিছু। বিনিময়ে এদেশের ১৭কোটি মানুষ কি পেলো? শুধু কি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা পানি? ফারাক্কার অভিশাপতো রয়েই গেছে, হালে সিকিমের উজানে ২০টি বাঁধ নিয়ে যাচ্ছে প্রায় সবটুকু পানি, যেটুকু ছাড়ছে সেটুকুও তারাই আবার পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে নিচ্ছে। ভরা মৌসুমে পানি ছেড়ে বন্যায় ডুবিয়ে মারছে, আবার খরা মৌসুমে পানি আটকে দিচ্ছে। যার ফলে নদীমাতৃক বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। দেশের মানুষের ন্যায্য প্রাপ্যটুকুও দর কষে আদায়ে ব্যর্থ এই নতজানু সরকার।
দেশ কি পেলো আর না পেলো তাতে কি? দিল্লীর পুতুল হয়ে সুতোর টানে নড়েচড়ে “ঠাকুর-শান্তি পুরস্কার তো এসেছে দেশে! এটাই বা কম কিসের?
১৭ কোটি মানুষের জন্য একটি টি মাত্র ঠাকুর পুুরস্কার এলো, এ কেমন না ইনসাফ!

বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে অনুমতি ছাড়াই জোরজবরদস্তি করে অবৈধভাবে বছরের পর বছর পানি উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে ভারত। আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে সীমান্তের জিরো লাইনে পাম্প বসিয়ে নদী থেকে পানি উত্তোলন করে চলেছে নয়াদিল্লি। পানি উত্তোলন না করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানালেও পাত্তাই দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
এবারের সফরে সেই অবৈধতার পাকাপোক্ত বৈধতা দিয়ে এলেন আমাদের সরকারপ্রধান।

নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বহুল প্রত্যাশিত ও আলোচিত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে আশাব্যঞ্জক কোনো আলোচনাই হয়নি। দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত তিস্তার পানির হিস্যার বিষয়টিকে পুরোপুরি পাশ কাটিয়ে উল্টো এখন ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি ত্রিপুরার সাব্রুম শহরে সরবরাহে রাজি হয়ে এসেছে বাংলাদেশ।

সঙ্কীর্ণ দলীয় স্বার্থে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে
এভাবে আর কতদিন? বাংলাদেশের জনগণের সাথে দুই দেশের সরকারের এই তামাশা আর কত দিন। তামাশার পর তামাশা, নাটকের পর নাটকে জনগণ আর বোকা হবে না।

ক্যাসিনোর পুরোনো নাটক আজকেই সামনে আনলেন? অবৈধ চুক্তির হেডলাইন ঢাকতে মিডিয়াকে দিলেন নতুন হেডলাইন? জনগণ এখন সব বোঝে। আজকের হেড লাইন হবে-
“দেশবিরোধী চুক্তি ঢাকতে-পুরোনো ক্যাসিনো নাটকের নতুন সংস্করণ”।
বন্ধুত্ব আর দাসত্ব এক কথা নয়। আমরা খালি দিয়েই গেলাম, বিনিময়ে জুটলো না কিছুই। ১৭ কোটি মানুষ কি এখন পদক ধুয়ে পানি খাবে?

মির্জা আব্বাস

সদস্য: বিএনপির কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটি