এনআরসি বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল উত্তরপ্রদেশ, নিহত ১

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ২১ ২০১৯, ২১:২৫

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী বিক্ষোভ ঘিরে শনিবারও উত্তাল উত্তরপ্রদেশ। এদিন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এক ব্যক্তি। যোগীর রাজ্য ছাড়া থমথমে রাজধানী দিল্লিও। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে বৃহস্পতিবার থেকে টানা দু’দিনের বিক্ষোতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৪-তে। তাদের মধ্যে আট বছরের এক শিশুও রয়েছে। গ্রেফতার অসংখ্য। শুধুমাত্র প্রয়াগরাজ থেকেই ১৫০ জন ও গাজিয়াবাদে থেকে ৬৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

এ দিন সকাল থেকেই উত্তরপ্রদেশের রামপুরে বিক্ষোভ শুরু হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ফাটানো হয় কাঁদানি গ্যাসের শেল। যোগীর রাজ্যে গভীর রাত থেকেই কোপ পড়েছে বিভিন্ন জেলার ইন্টারনেট পরিষেবায়। রাজ্যে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেলের সঙ্গে দেখা করবেন আদিত্যনাথ।

উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবার বিভিন্ন জেলায় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে শুধুমাত্র মেরঠেই নিহত হয়েছেন চার জন। ওই সংঘর্ষের মধ্যে পড়েই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক নাবালকের। জেলায় জেলায় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। পুলিশ সূত্রে খবর, অন্তত ছ’জন পুলিশকর্মীর গুলি লেগেছে। তাদের অবস্থা গুরুতর। রাজ্য পুলিশের ডিজি ওপি সিংহের দাবি, পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে জনতা। তবে সেই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া কয়েকটি ভিডিও। তাতে দেখা গিয়েছে, জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধের সময় গুলি চালাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশকর্মীরা। গুলিচালনা ছাড়াও সংঘর্ষের সময় পাথর ছোড়া ও পুলিশের একাধিক গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটে।

উত্তরপ্রদেশের জেলার জেলায় সংঘর্ষের পর রাত থেকেই লখনউ, বিজনৌর, মেরঠ, ফিরোজাবাদ, কানপুর, সম্বল, মোরাদাবাদ, আলিগড়, বরেলী, প্রয়াগরাজ (ইলাহাবাদ)-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়। রাজ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

এই আবহে সিএএ-র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র নেত্রী মায়াবতী। এ দিন কেন্দ্রের কাছে এই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

সেই সঙ্গে তার আরো দাবি, সিএএ ঘিরে এনডিএ জোটের মধ্যেই মতপার্থক্য তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি, শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করার জন্যই সকলের কাছে আবেদন করেছেন মায়াবতী। তাঁর কথায়, ‘‘এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে এখন এনডিএ-র মধ্যেই মতপার্থক্য গড়ে উঠতে শুরু করেছে। অতএব এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক। সেই সঙ্গে সকলে যাতে কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করেন, তারও আবেদন করছি।’’

তবে এই আবহে এই দিন নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয় রামপুরে। সেখানে বিক্ষোভের সময় ফের উত্তেজনা ছড়ায়। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ।

উত্তরপ্রদেশের মতো উত্তপ্ত পরিস্থিতি না হলেও উত্তেজনা রয়েছে দিল্লিতেও। গভীর রাতে ভীম আর্মির প্রধান আজাদের গ্রেফতারির পাশাপাশি আটকদের মধ্যে আট নাবালকের উপস্থিতি নিয়েও দরিয়াগঞ্জ থানায় বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। আনন্দবাজার পত্রিকা