৮৬ বছর পর আয়া সোফিয়ায় শোনা গেল আজান

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ১১ ২০২০, ০০:২৬

ইলিয়াস সারোয়ার: তুরস্কের এক আদালতের রায়ের পর ইস্তাম্বুলের খ্যাতনামা আয়া সোফিয়ায় আজান দেয়া হয়েছে। এর আগে এটিকে জাদুঘরে পরিণত করা ঠিক ছিল না বলে রায় দিয়েছে তুর্কী আদালত।

এর পরেই তুরস্কের ইসলামপন্থী সরকারের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান এটিকে মসজিদ বানানোর আদেশে সই করেছেন। এরপর আয়া সোফিয়াতে প্রথমবারের মত আজান দেয়া হয়। সরকার সমর্থক ‘হাবার টিভি’সহ অন্যান্য টেলিভিশন চ্যানেলে এই দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

রেচেপ তাইপ এরদোয়ান বলছেন, আদালতের রায়ের পর নামাজ পড়ার জন্য আয়া সোফিয়াকে খুলে দেয়া হবে। টুইটারে এক পোস্টে মি. এরদোয়ান জানান, আয়া সোফিয়ার সম্পত্তি ‘দিয়ামাত’ বা তুর্কী ধর্মীয় বিষয়ক দফতরের হাতে সোপর্দ করা হবে।

প্রসঙ্গত, বাইজান্টাইন সম্রাট জুস্টিনিয়ান এক’র তত্ত্বাবধানে ৫৩৭ সালে অর্থোডক্স গীর্জা হিসেবে গড়ে উঠেছিল হায়া সোফিয়া। ১৪৫৩ সালে অটোমনরা ইস্তাম্বুল জয়ের পর এটিকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়। সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতেহ ইস্তাম্বুল জয় করার পর যাজকদের কাছ থেকে আয়াসুফিয়া বিক্রি করার আবেদন জানান এবং যাজকরা রাজী হলে নিজের টাকায় গির্জাটি ক্রয় করেন। তিনি বিজয়ী হিসেবে গির্জা ছিনিয়ে নিতে পারতেন, রাষ্ট্রীয় টাকায় কিনতে পারতেন, কিন্তু সেসব না করে চুক্তিনামা করে নিজের টাকায় গির্জাটি ক্রয় করেন। এখনো সেই ঐতিহাসিক চুক্তিনামা সংরক্ষিত আছে। তারপর ১৯৩৪ সালে খেলাফতের পতনের পর আধুনিক তুরস্কের স্থপতি মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক হায়া সোফিয়াকে জাদুঘরে রূপান্তর করেন। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে নামাজ আদায়ের দাবি জানিয়ে আসছে তুর্কি মুসলিমরা।

আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তর করার শুনানির রায়ে দেশটির আদালত ১৯৩৪ সালে আয়া সোফিয়াকে জাদুঘরে রুপান্তরিত করে দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলেও উল্লেখ করেন।

আদালতের রায়ের পর দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেন, মসজিদে রুপান্তরিত হওয়ার পর হায়া সোফিয়া আগের মতোই বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। একইসাথে তুরস্কের ব্লু মসজিদ, ফেতিহ ও সোলাইমান মসজিদের মতো অন্যান্য বিখ্যাত মসজিদের মতো এটি নিয়মিত দর্শনার্থীদের জন্যও খোলা থাকবে।

অন্যদিকে রাশিয়ার অর্থোডক্স চার্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে।