হচ্ছে না পর্যাপ্ত পরীক্ষা, চরম ভয়াবহতার সামনে বাংলাদেশ!

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মার্চ ৩০ ২০২০, ১১:০৫

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানায়, দেশে এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ১৫ জন এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরে মাত্র ৪২টি এবং চট্টগ্রামের বিআইটিইডিতে ৫টিসহ মোট ৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

অথচ ২৪ ঘণ্টায় ৩৪৫০ কল পেয়েছে আইইডিসিআর। যার প্রত্যেকটি কলই করোনা সক্রান্ত বলে জানিয়েছেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। এদিকে অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন আইইডিসিআরের হটলাইনে অনেকেই সংযোগ পান না। যারা সংযোগ পান তাদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজনের পরীক্ষা করা হয়। আইইডিসিআর করোনা পরীক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায় ঝুঁকি বাড়ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বারবার বলে আসছে, করোনা আক্রান্তদের শনাক্ত করতে যত বেশি সম্ভব পরীক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ যত বেশি মানুষের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা যাবে, জানা যাবে সংক্রমিত হয়েছেন কিনা, তত তাড়াতাড়ি তাদের আইসোলেশনে রাখা যাবে। তাতে কমবে সংক্রমণের মাত্রা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, দ্রুত পরীক্ষা করার বন্দোবস্ত থাকায় জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণ তেমন ব্যাপক আকার নিতে পারেনি। আর এই সুযোগ না থাকার ফলেই ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তারা বলছেন, দ্রুত চিহ্নিত না করতে পারলে সংক্রমণ ঠেকানো মুশকিল। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশেও পর্যাপ্ত পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায় দিন দিন বাড়ছে ঝুঁকি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথম থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের শনাক্তকরণে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রোগী শনাক্তে পরীক্ষা বাড়াতেই হবে। রোগী শনাক্ত করা না গেলে তার মাধ্যমে অনেকে আক্রান্ত হবেন। এর ফলে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এটি মহামারী রূপ নিতে পারে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন আইইডিসিআরের হটলাইনে অনেকেই সংযোগ পান না। যারা সংযোগ পান তাদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকজনের পরীক্ষা করা হয়। আইইডিসিআর করোনা পরীক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।

প্রখ্যাত ভাইরোলজিস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা বাড়াতেই হবে। পরীক্ষা করা না হলে কার দেহে ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে, সেটা জানা গেল না। এতে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি। এখন অনেক মানুষ গ্রামে অবস্থান করছে, সেখান পর্যন্ত পরীক্ষা বিস্তৃত করতে হবে। এখন পরীক্ষার হার বাড়ানোর বিকল্প নেই।’

বিশ্বব্যাপী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৮ জন। মারা গেছেন ২৭ হাজার ৩৭০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৭৩ জন। বর্তমানে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭১৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ লাখ ১৩ হাজার ১৫৬ জনের অবস্থা স্থিতিশীল এবং ২৩ হাজার ৫৫৯ জনের অবস্থা শঙ্কটাপন্ন।