স্বাস্থ্যখাতে সরকারের অব্যবস্থাপনার মূল্য দিয়ে যাচ্ছে জাতি, ছাত্র মজলিস সভাপতি

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ২০ ২০২০, ২২:০০

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের মুহতারাম কেন্দ্রীয় সভাপতি মনসুরুল আলম মনসুর বলেন, স্বাস্থ্যখাতে সরকারের অব্যবস্থাপনার মূল্য দিয়ে যাচ্ছে জাতি।

এবং করোনার শুরু থেকে সরকারের উদাসীনতার কারণে জাতিকে ভবিষ্যতেও চরম মূল্য দিতে হবে।

তিনি বলেন, করোনা মহামারীর সময় দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের দুরবস্থার চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পদে পদে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট, স্বজনপ্রীতির ছবি একে একে প্রকাশ্যে আসছে। চিকিৎসাসেবার নামে স্বাস্থ্য খাতে চরম অব্যবস্থাপনার বিষয় মানুষের মুখে মুখে। দুর্যোগের সময় পুরো স্বাস্থ্য খাতের মুখোশ খুলে পড়েছে। করোনা টেস্টের নামে তোলপাড় চলছে। এদিকে কোভিড-১৯ অজুহাতে অন্য রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হয়নি। ।
দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেননি। ফলে বিনা চিকিৎসায় মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। সর্বত্রই আজ জিম্মি হয়ে পড়েছে রোগী ও তাদের স্বজন।

লাইসেন্স ছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে, তা দেখার কেউ নেই। এসবের সঙ্গে জড়িতদের কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ফলে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। তারাই আবার ফিরে ফিরে আসছে।

কেন্দ্রীয় সভাপতি আরো বলেন,
দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। অবকাঠামো আছে, যন্ত্রপাতি আছে, ওষুধ-পথ্যের সরবরাহ যাচ্ছে নিয়মিত। আছে চিকিৎসক, নার্স, আয়াসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী। শুধু নেই কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা। রাজধানী থেকে শুরু করে নিভৃত পল্লী পর্যন্ত সর্বত্রই অভিন্ন অবস্থা। চিকিৎসকের বদলে নার্স, ওয়ার্ডবয়, আয়াসহ দালালরা নানা কায়দা-কৌশলে অসহায় রোগীদের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। ডাক্তার সেজে অপারেশন করছে ওয়ার্ডবয়। সংশ্লিষ্ট বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সবাই এসব জানেন। কিন্তু তেমন কোনো ব্যবস্থা নেন না। যার ফলে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সুযোগে এ খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে, যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য খুবই লজ্জার বিষয়। রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদের মতো ঘৃন্য অপরাধীদের জন্ম হচ্ছে। সাইনবোর্ডসর্বস্ব হাসপাতাল ও বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে করোনা চিকিৎসা ও নমুনা পরীক্ষার দায়িত্ব দেয়া হলেও এর দায় কেউ নিচ্ছে না। অথচ এ অনিয়মের শিকার হয়ে ভুগছেন সাধারণ মানুষ। জেকেজির পর রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের অদক্ষতা ও ব্যর্থতাকে স্পষ্ট করেছে।

কেন্দ্রীয় সভাপতি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। এবং দুর্নীতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন, স্বাস্থ্য খাতে সেটি অব্যাহত রাখার জোর দাবি ও অনতিবিলম্বে করোনার টেস্ট’র ফীঃ বাতিল করার আহবান জানান।

২০ জুলাই ২০১৯-২০ সেশনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পরিষদের ষান্মাসিক অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনসুরুল আলম মনসুরের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ মনির হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও খেলাফত মজলিসের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ শফিক উদ্দীন, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল জলিল, প্রকৌশলী আব্দুল হাফিজ খসরু, মাওলানা ইলিয়াস আহমদ।

অধিবেশনে দায়িত্বশীলদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ শাহীন, প্রশিক্ষণ ও প্রচার সম্পাদক বিলাল আহমদ চৌধুরী, অফিস ও স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল গাফফার, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য শাব্বীর আহমাদ, আফজাল হোসাইন কামিল, মুহাম্মদ রায়হান আলী, মুহাম্মদ জারির হুসাইন প্রমুখ।