সিরিজের শেষ ম্যাচে বড় ধরণের হার টাইগারদের

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ২৮ ২০২১, ২১:৩৮

প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই তিন ম্যাচের সিরিজটা নিশ্চিত করে রেখেছিল বাংলাদেশ। তবে বিশ্বকাপ সুপার লিগ এবং ছন্দ ধরে রাখতে তৃতীয় ম্যাচটাও জিততে মরিয়া ছিল তামিম ইকবালের দল। বাজে ফিল্ডিং আর ব্যাটিং দুর্দশার কারণে পারল না বাংলাদেশ। শ্রীলংকার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে আজ ৯৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৮ মে) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বোলিংটা বেশ ভালোই হয়েছে স্বাগতিকদের। কিন্তু ফিল্ডিং আর ব্যাটিং হলো যাচ্ছে-তা। আগের দুই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসকে প্রায় একই টেনেছিলেন মুশফিকুর রহিম। আজও চেষ্টা করেছিলেন বটে, কিন্তু আগের দুই ম্যাচের মতো সফল হতে পারেননি মুশি। বাংলাদেশও পারেনি শ্রীলংকার বড় স্কোর তাড়া করতে। সিরিজ জিতলেও ব্যাটিং নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা থেকেই গেল।

২৮৬ রানের জবাব দিতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। অনেকদিন অফ ফর্মে থাকা লিটন কুমার দাসকে বসিয়ে আজ তরুণ নাইম শেখকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। তাতেও ওপেনিং জুটির দুর্দশা কাটেনি। মাত্র ১ রানে করে দলীয় ২ রানের মাথায় বিদায় নাইম। তিনে নেমে আজও ব্যর্থ সাকিব আল হাসান।

পুরো ইনিংস জুড়ে দারুণ বোলিং করা দুশমান্তা চামিরাকে পুল করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ব্যক্তিগত ৪ রানে আউট হয়েছেন সাকিব, বাংলাদেশের রান তখন ৯। খানিকটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে তামিম ইকবাল যখন ব্যক্তিগত ১৭ রান করে ফিরলেন বাংলাদেশের রান তখন ২৮।

ধস ঠেকাতে এরপর উইকেটে পড়ে থাকতে চেয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। টপাটপ উইকেট পড়ার গতি ঠেকাতে পেরেছেন ঠিকই, কিন্তু সাবধানে খেলতে গিয়ে রান রেট বাড়িয়ে দিয়েছেন দুই ডানহাতি ব্যাটার। এই চাপের মধ্যে মুশফিকও ফিরে গেলে আর কোমড় সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ।

মুশফিক রান বাড়াতে গিয়ে আউট হয়েছেন ৫৮ বলে ২৮ রান করে। অভিজ্ঞ ব্যাটার ফেরার পর মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেক জুটি রানের গতি বাড়িয়ে উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করেছে। বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি এই জুটি।

দলীয় ১২৫ রানের মাথায় ৭২ বলে ৫২ রান করে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ফেরেন মোসাদ্দেক। বিপদে পড়া দলকে তারপর আর টেনে তুলতে পারেননি বাকিরা। মাহমুদউল্লাহ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৫তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে কেবল হারের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছেন।

৪২.৩ ওভারে ১৮৯ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৬৩ বলে ২ চার ১ ছয়ে ৫৩ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। শ্রীলংকার হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন দুশমান্তা চামিরা। ৯ ওভারে ১৬ রান খরচায় ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন চামিরা। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন হাসারাঙ্গা ও রমেশ মেন্ডিস।

এর আগে বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিংকে পুঁজি করে ২৮৬ রানের সংগ্রহ গড়ে শ্রীলংকা। টস জিতে ব্যাটিং করতে নামা শ্রীলংকার দুই ওপেনার শুরুটা করেন দারুণ। প্রথম উইকেটে ৮২ রান তোলেন দুই ওপেনার কুশল পেরেরা ও ধানুশকা গুনাথিলাকা। ১২তম ওভারে লংকানদের লাগাম টেনে ধরেন তাসকিন আহমেদ। ওই ওভারের দ্বিতীয় ও শেষ বলে গুনাথিলাকা (৩৯) ও পাথুম নিশাঙ্কাকে (০) ফেরান তাসকিন। এই তাসকিনই আজ বাংলাদেশের সফল বোলার। একপ্রান্ত থেকে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নিয়েছেন তাসকিন।

তবে অন্যপ্রান্ত থেকে শ্রীলংকাকে দারুণভাবে টেনেছেন কুশল পেরেরা। এতে অবশ্য বাংলাদেশি ফিল্ডারদের ‘অবদান’ও আছে। সেঞ্চুরি পাওয়া পেরেরার ক্যাচ তিনবার ছেড়েছেন বাংলাদেশি ফিল্ডাররা। দুবার সাকিবের বলে, একবার মোস্তাফিজের বলে। শ্রীলংকান অধিনায়ক শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ১২০ রানে।

১২২ বল খেলে ১১টি চার ১টি ছয়ে ১২০ রানে আউট হয়েছেন শরিফুল ইসলামের বলে। মিডল অর্ডারে ধনঞ্জয়া ৭৭ বল খেলে ৪টি চারের সাহায্যে ৫৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন। শ্রীলংকা ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে তোলে ২৮৬ রান।

বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ৯ ওভার বোলিং করে ৪৬ রান খরচায় তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। শরিফুল ৮ ওভারে ৫৬ রান খরচায় নিয়েছেন ১ উইকেট। সাকিব, মিরাজ, মোস্তাফিজ ১০ ওভারে যথাক্রমে ৪৮, ৪৮, ৪৭ রান খরচ করলেও উইকেট পাননি।