সরকার দেশে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করছে: ফখরুল

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ২৬ ২০২১, ২২:২৭

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ফাইল ফটো)

সরকার দেশে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে যে সম্প্রদায়িকতার উত্থান হয়েছে তাকে নিয়ে এসে তারা (সরকার) বাংলাদেশে ঢুকিয়েছে। আর এজন্যই আজকে ২৬ মার্চের যে ঘটনা তাকে কেন্দ্র করে সারা দেশের মানুষকে একটা অস্থির অবস্থায় নিয়ে ফেলেছে। গ্রেপ্তার করছে, গুম করছে এবং নির্যাতন শুরু করেছে। গোটা দেশে সাম্প্রদায়িকতার যা কিছু হচ্ছে তার জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী হচ্ছে এই আওয়ামী লীগ সরকার। তারা জেনে শুনে এটা করছে।

বুধবার বিকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র আজকে নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্র হেরে যাচ্ছে, পরাজিত হচ্ছে ধর্মান্ধতার কাছে, পরাজিত হচ্ছে কর্তৃত্ববাদের কাছে, ফ্যাসীবাদের কাছে। ক্ষমতায় যারা থাকছেন তারা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য মানুষকে হত্যা করছেন। মানুষকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন, নির্যাতন করছেন। এটা প্রায় সমগ্র পৃথিবী জুড়েই চলছে। আমরা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়ে দাঁড়িয়েছি এই সময়ে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যারা একাত্তর সালে যুদ্ধ করেছিল সত্যিকার অর্থে একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সাম্যের ভূখণ্ডের মধ্যে মানুষের রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য। সেটা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে গেছে। সেটা এক শ্রেণির মানুষ নিজেদের প্রভাবকে বিস্তার করার জন্য সমস্ত ব্যবস্থাগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা দানবীয় রাষ্ট্র তৈরি করেছে। এদেশে কোনো শান্তি নেই। এখানে হিংসা, প্রতিহিংসা কাজ করছে। এখানে কোনো কল্যাণ নেই। এখানে শুধু সাধারণ মানুষের পকেট লুট করে তাদের বৃত্ত তৈরি করছে।

বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ যে অন্ধকার জগত তৈরি করেছে তা সরিয়ে দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি আলোকিত রাষ্ট্র তৈরি করব। আসুন, আমরা এটাই শপথ গ্রহণ করি, বর্ণ নয়, কোনো ধর্ম নয়, সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দানবকে (সরকার) পরাজিত করি।

বিএনপির উদ্যোগে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পবিত্র দিন বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা হয়। এতে চট্টগ্রামের ফতেনগর দক্ষিণ সুনীতি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সূমঙ্গল থের মহামতি বুদ্ধের বানী পড়ে শুনান এবং প্রার্থনা করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে পবিত্র দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, একদিকে করোনা, আরেকদিকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের দুর্নীতি, নিপীড়ন-নির্যাতন। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে অবশ্যই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মুক্ত পরিবেশে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।

বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে ও সুভাষ চন্দ্র চাকমার সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা গৌতম চক্রবর্তী, অমলেন্দু দাশ অপু, জন গোমেজ, মনিষ দেওয়ান, সুশীল বড়ুয়া, সনত তালুকদার, অধ্যাপক জয়ন্ত বড়ুয়া, পার্থ প্রতিম বড়ুয়া ও গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।