সরকার তদন্ত করে যে সিদ্ধান্ত দেবে তা মেনে নেব: শাবি উপাচার্য

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১৯ ২০২২, ১৪:২৬

সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত কমিটি করে আমার যদি কোন অপরাধ বা দোষ পায় এবং সে অনুযায়ী কোনো সুপারিশ করে তাহলে সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেব। এমনটাই জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

উপাচার্য বলেন, ১৪ তারিখ থেকে শুরু করে প্রতিদিন আমাদের শিক্ষক প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং ট্রেজারার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। সমস্যা সমাধানের চূড়ান্ত সময়ে এসে কারা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি করে পুলিশকে চড়াও হতে বাধ্য করেছিলো, তা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত কমিটি হতে পারে। আমি যদি কোন দোষ করে থাকি, তাহলে সে অনুযায়ী সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে তা মেনে নেব।

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ যে হামলা করেছে তার জন্য আমি খুবই দুঃখিত। তারা আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থী, আমরা তাদের জন্যই এখানে আছি। তাদের মঙ্গল কামনা করি। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।

এদিকে ২রা ফেব্রুয়ারির বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

এর আগে, দাবি না মানলে আমরণ অনশনের যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে জমায়েত হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি বরাবর উপাচার্যের অপসারণের দাবি জানিয়ে চিঠি পোস্ট করা হয়। এছাড়া, রবিবারের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থীকে আসামি করে জালালাবাদ থানায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ

উল্লেখ্য, তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় না হওয়ায় রবিবার বিকেলে মিছিল থেকে উপাচার্যকে ধাওয়া করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। হামলা এড়াতে আইসিটি ভবনে আশ্রয় নেন উপাচার্য। এসময় সেই ভবনে তালা দিয়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে চলে বিক্ষোভ। দফায় দফায় শিক্ষক প্রতিনিধিরা আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়, পরে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। আলোচনায় ব্যর্থ হয় পুলিশও। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। প্রায় ৩ ঘন্টা পর পুলিশি অভিযানে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয় শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে। এ সময় সংঘর্ষে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশসহ আহত হয় অর্ধশতাধিক। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী।

এরপর পরিস্থিতির অবনতি হলে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যায় পুলিশ ও শিক্ষার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের পর এক জরুরি সভায় শাবিপ্রবির ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজা পদত্যাগ করেছেন, তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী।