সবার ওপরে পেঁয়াজ সত্য

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

নভেম্বর ১৫ ২০১৯, ১৮:২৭

।। মাসউদুল কাদির ।।

আগুনমুখো পেঁয়াজ এখন
রাখছে গরম বাজার
কি অপরাধ এই আমাদের
প্রশ্ন হাজার হাজার।

যাই হাঁটুরে বাজার করি
পেঁয়াজ দেখাটাই মানা
আগুনঝাঁজে ঘি ঢালে কে
আমরা কি ভাই কানা?

পেঁয়াজের ঝাঁজে আজ কাত না হয়ে পারলাম না। বাজারে থলে হাতে পেঁয়াজের দোকানের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম। গতকালকের পত্রিকায় ডাবল সেঞ্চুরির কথা আমরা লিখেছি। আজ বাজারে এসেই মনে হলো, এত দামি পেঁয়াজের পাশে একটু দাঁড়াই। তাকিয়ে দেখলাম, অন্তত দশজন দাম জিগ্যেস করেছেন, ভালো পেঁয়াজটা আড়াইশ শোনে কুপোকাত। কেউ আর একটু দাঁড়াচ্ছে না। দ্রুত কেটে পড়ছেন। দোকানীর মেজাজ ভীষণ খারাপ। এত দামী পেঁয়াজ কেউ কিনছে না।

চোখের সামনেই দেখলাম, অনেকেই চেহারাটা বাংলা পাঁচ করে সটকে পড়ছেন।

গরু খাওয়ার মতোই মুসলমান পেঁয়াজে অভ্যস্ত। এই পেঁয়াজের গন্ধ নিয়ে মসজিদে যাওয়া বারণ থাকলেও পেঁয়াজে আসক্ত বলা যায় মানুষকে। আমি নিজেও এমন কি ঘরের বাচ্চারাও। পেঁয়াজমিশ্রিত খাবারে তাদের আগ্রহ বেশি। যে কোনো ভাজিই বলি আর সর্বনিম্ন ডিম ভাজিই হোক না কেন? পেঁয়াজটা লাগে, জরুরি হয়ে পড়েছে। যদিও আজকের ডিম ভাজিটা পেঁয়াজ ছাড়াই করতে বল্লাম। যুদ্ধটা নিজেই ঘোষণা করলাম। পেঁয়াজ ছাড়া একটা সকাল কাটালাম, কেমন যায় দেখি।

বাজারে মানুষের অসহায়ত্ব বিরাজমান। কেবল পেঁয়াজেই যে এমন সমস্যা তা নয়। অন্যসব তরকারিও আগুনমুখো। রা করা যায় না। এ সময়ে বাজার খুব শান্ত থাকে। শরত পেরিয়ে হেমন্ত চলছে। হেমন্ত গড়াগড়ি করে মাসের একপক্ষ পার হয়ে গেছে। কিন্তু বাজারে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

গ্রামে শুরু হতে চলেছে নবান্ন উৎসব। আগুনে ধান কাটার মৌসুম। ঘরে ঘরে বিভিন্ন জায়গা থেকে শুনলাম ছুটে এসেছেন ধান কাটার মানুষেরা। আমাদের ঘরে আগের মতো আর জমি করা হয় না। তবু ক’জন ধান কাটার শিল্পী এসেছেন। এই সময়টা কী যে আনন্দের ছিল বলে শেষ করা যাবে না। গ্রামের শিশুরা সবসময় এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করতো।

মাসউদুল কাদির
সভাপতি, শীলন বাংলাদেশ