রাশেদ খান মেননকে অবিলম্বে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে -আল্লামা শাহ আহমদ শফী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ০৫ ২০১৯, ১৫:১২

একুশে জার্নাল ডেস্ক: গত ৩রা মার্চ রবিবার বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাংসদ রাশেদ খান মেননের জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবী জানিয়েছেন আমীরে হেফাজত, দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

আজ মঙ্গলবার রাত ৮:৪৫মিনিটে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি তিনি এ দাবী জানান।

আল্লামা আহমদ শফী বলেন, কওমী মাদরাসার সাথে এদেশের আপামর জনগণের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। জনগণের আর্থিক সহযোগিতায় হাজার হাজার কওমী মাদরাসা গড়ে উঠেছে । রাষ্ট্রীয় কোন সহযোগিতা ছাড়া দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি, দুর্নীতি, মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ এবং একটি ধর্মপ্রাণ জাতি উপহার দিতে কওমী মাদরাসা অনন্য নজির স্থাপন করেছে। যা দেশের ইতিহাসে বিরল। সৎ, যোগ্য ও ধর্মপ্রাণ নাগরিক তৈরির পবিত্র স্থান কওমী মাদরাসাকে রাশেদ খান মেনন ‘বিষবৃক্ষ’ বলে আলেম-উলামা, ছাত্র সমাজ ও কোটি মানুষের মনে আঘাত করেছেন। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কওমী মাদরাসাকে বিষবৃক্ষ বলে সম্বোধন করে তিনি রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। এজন্য অবিলম্বে সাংসদ রাশেদ খান মেননকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কাদিয়ানী সম্প্রদায় তথা আহমদিয়া মুসলিম জামাত ইসলামী শরীয়ত তথা কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক কাফের। খতমে নবুয়ত অস্বীকারকারী ও নবী রাসূলদের প্রতি কটূক্তিকারী মুসলমান থাকতে পারে না। তাদের কাফের ঘোষণা ঈমানের দাবী।
শুধু পাকিস্তান নয় সৌদি আরব, মিসর মালয়েশিয়াসহ পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্র ও সংগঠন কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করেছে। রাশেদ খান মেনন ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঈমানী আন্দোলনকে পাকিস্তানি যোগসাজশ দেখিয়ে মূলত অমুসলিম কাদিয়ানিদের পক্ষ নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের কোটি-কোটি মুসলমানদের ধর্মানুভূতিতে অাঘাত করেছেন।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, হেফাজতে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা রক্ষার সংগ্রামে সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সংগঠন। হেফাজতে ইসলামের কাজ হলো, মহান আল্লাহ তা’আলা, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. ও হযরাতে সাহাবায়ে কেরাম এর শান-মান মর্যাদা রক্ষা, নাস্তিক্যবাদী ইসলামবিদ্বেষী অপশক্তি এবং বিশ্বব্যাপী ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদি খ্রিস্টান সাম্রাজ্যবাদী, রাম-বাম গোষ্ঠীর মোকাবেলায় সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। দেশি-বিদেশি কোন অপশক্তি ইসলামকে ফুৎকারে উড়িয়ে দেয়ার স্পর্ধা দেখালে দেশের তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে তা প্রতিরোধ করা এবং যেকোন ধরণের সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা।

তিনি আরও বলেন, ইসলাম ধর্ম সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার কথা বলে। ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম দেশের কোথাও কোন সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করেছে এমন কোন নজির নেই। তাছাড়া তাবলীগ জামাতের চলমান বিরোধ নিরসন এবং স্কুল সিলেবাসে বাদ দেয়া অংশগুলো পুনঃস্থাপনের আন্দোলন গণমানুষের দাবী ছিলো। হেফাজতে ইসলাম সে দাবীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে এসব ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।

তিনি আরও বলেন, রাশেদ খান মেনন মূলত তার প্রদত্ত বক্তব্যের মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে ধর্মবিদ্বেষ মনোভাব প্রকাশ করেছেন। অবিলম্বে তিনি যদি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চান তাহলে তৌহিদি জনতা এসব কটূক্তি, অপপ্রচার ও ধর্মবিদ্বেষী বক্তব্যের সমুচিত জবাব দেবে।

-আল্লামা শাহ আহমদ শফী (হাফিজাহুল্লাহু)
আমীর, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ
চেয়ারম্যান, আলহাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়্যাহ বাংলাদেশ