রবীন্দ্রনাথের সূক্ষ্ম শেরেকি

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ১২ ২০১৯, ১৬:৪৮

 

মনোয়ার শামসী সাখাওয়াত

খেয়াল করলাম কিছু আধা-জানা-শোনা লোক ওয়াইজ গাইয়ের মত পন্ডিতি ফলিয়ে বলতেছে — আরে রবীন্দ্রনাথ তো একেশ্বরবাদী ছিলেন; তো তৌহিদের সঙ্গে সমস্যা কি?
কিন্তু এই আধুরা-জানা-শোনারা জানে না যে, রবীন্দ্রনাথ উপনিষদ অনুসারী একেশ্বরবাদী হলেও আসলে অগ্নিউপাসক ছিলেন। এদিক দিয়ে ব্রাহ্ম ধর্ম অনুসারীদের সঙ্গে প্রাচীন ইরানী অগ্নিউপাসক জরথুষ্ট্র ধর্মের মিল রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ এ ব্যাপারে খুব সচেতনও ছিলেন। তিনি ইরানে সফর করার সময় কবি হাফিজ শিরাজীর সমাধি দেখতে গিয়ে এক ভাষণে এই মর্মে গর্ব করে বলেছিলেন যে, প্রাচীন ইরান আর প্রাচীন ভারতের আর্য ধর্ম ও ঐতিহ্যের মধ্যে ব্যাপক মিল রয়েছে; এই দুই ধারা আসলে এক ও অদ্বিতীয় এবং তিনি এই ধারার আধুনিক ভারতীয় সংস্করণ।

কাজেই যারা রবীন্দ্রনাথ তাঁর পিতা দেবেন্দ্রনাথের সূত্রে হাফিজের দিওয়ান পড়ে প্রভাবিত হয়েছিলেন বলে তাঁকে একজন একেশ্বরবাদী বলে মনে করে তারা আসলে ইরানী জরথুষ্ট্রীয় অগ্নিউপাসক দ্বৈতবাদী একেশ্বরবাদ ও ইসলামের আপসহীন তৌহিদের পার্থক্য কি সেটা জানে না।

অনেক মুসলিম সুফি তরিকার মধ্যেও এই ইরানী জরথুষ্ট্রীয় ও মাজদাকি দ্বৈতবাদী একেশ্বরবাদের অনুপ্রবেশ ঘটে বিভ্রান্তি ও শেরেকি তৈরি হয়েছে। ইসলামের বা কুরআনের তৌহিদ হচ্ছে সম্পূর্ণ একত্ববাদী একেশ্বরবাদ; এখানে ইরানী দ্বৈতবাদী একেশ্বরবাদী অগ্নিউপাসনার কোন সুযোগ নেই।

রবীন্দ্রনাথের এই গানটি পড়ুন; এটি তাঁর অগ্নিউপাসক একেশ্বরবাদী চেতনার একটি জনপ্রিয় স্মারক-
“আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।
এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে ॥
আমার এই দেহখানি তুলে ধরো,
তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো–
নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে ॥
আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব
সারা রাত ফোটাক তারা নব নব।
নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো,
যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো–
ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে ঊর্ধ্ব পানে ॥”

রবীন্দ্রনাথ এই ব্রহ্মসঙ্গীতটি লিখেছিলেন ১৯১৪ সালে।

সো কাম অন ওয়াইজ গাইজ, ওয়াইজেন আপ!