মোদির কাছে বকেয়া টাকা দাবি মমতার

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ১৯ ২০২১, ১২:৫৯

ডেঙ্গু নিধনে ‘একাই লড়ছে’ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। ন্যাশনাল ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম থেকে প্রতিবছর আর্থিক সাহায্য পাওয়ার কথা থাকলেও গত তিন বছরে একটি টাকাও পায়নি মমতার সরকার। তাই ফের টাকা চেয়ে দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে রাজ্যটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, শুধুমাত্র ডেঙ্গু নিধনে প্রতিবছর পশ্চিমবঙ্গের কোষাগার থেকে খরচ হয় অন্তত ৭০০ কোটি টাকা। এই অর্থের প্রায় অর্ধেক খরচ কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়ার কথা। বরাদ্দ অর্থের একটা বড় অংশ যায় পৌরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়ি বাড়ি নজরদারি চালাতে। বাকি টাকা খরচ হয় ডেঙ্গুর কিট কিনতে।

অবশ্য গত তিন বছর ধরে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের ২৭টি জেলাতে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটাই কম। কিন্তু এই বছর বৃষ্টি যেহেতু বেশি হবে, তাই ডেঙ্গু বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে স্বাস্থ্য দফতরের ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগ।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছায় ডেঙ্গুর প্রকোপ। সেবছর রাজ্যটিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার। মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জনের। এমন অবস্থায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নেয় মমতার রাজ্য সরকার। লাগাতার বছরভর কাজ করে মেলে সফলতাও। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জমে থাকা পানি নষ্ট করা এবং ড্রেন-নালা পরিষ্কার করা, গাপিপি মাছ ছাড়া এবং সচেতনতা প্রচারের কারণে পরের বছর বিস্ময়করভাবে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমে যায়।

২০২০ সালে পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪ হাজার ১৯৫ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয় ১০ জনের। আর চলতি বছরের ১৬ জুন পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৪ জন। কারণ একটাই লাগাতার প্রচার ও নজরদারি। ডেঙ্গুর মশা ও মশার লার্ভা নষ্ট করতে একটানা কাজ চলছে।

তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ যেকোনো সময় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েই গেছে। কারণ, বৃষ্টি বেশি হচ্ছে এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত। তাই কেন্দ্রীয সরকারের বকেয়া টাকা পেলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আরও জোরদার কর্মসূচি হাতে নেওয়া সম্ভব বলে ভাবছে পশ্চিমবঙ্গ।

আর তাই জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে গত তিন বছরে এই খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে তার সব তথ্য তুলে ধরে মমতার সরকার বলছে, বাড়ি বাড়ি নজরদারির জন্য নগরোন্নয়ন দফতর ইতোমধ্যেই প্রায় ৫৬ হাজার কর্মী নিয়োগ করেছে। এছাড়া কীটনাশক ছড়াতে প্রায় ৭ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। অস্থায়ীভাবে তারা কাজ করছেন। দিনে তাদের ১৭৫ টাকা ভাতা দেওয়া হয়।

এছাড়াও ডেঙ্গুর কিটের দাম বেড়েছে। এখন খোলাবাজারে কিটের দাম গড়ে ৯০০ টাকা। সব জেলা ও ব্লক হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট সরবরাহ করা হচ্ছে। এই বিশাল খরচ সামাল দিতেই মোদি সরকারের কাছে পাওনা অর্থ দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে মমতার সরকার।