মোদিকে খুশি করতে নিরীহ ছাত্রদের হত্যা সরকারের পতন ঘন্টা বেজে গেছে: মুফতী ফয়জুল করীম

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ২৭ ২০২১, ১৮:১৫

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০তম সুবর্ণজয়ন্তীতে মানবতার দুশমন মোদির আগমনে প্রতিবাদে জনতার উপর পুলিশ গুলি করে মাদরাসা ছাত্রসহ ৬জনকে হত্যা করে ৭১-এর ২৬ মার্চের ভয়াবহ তান্ডবের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, নিরীহ জনতাকে হত্যা করে সরকারের পতনঘন্টা তরান্বিত করেছে।

তিনি বলেন, সভা-সমাবেশ, প্রতিবাদ করা এটা নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার। জনগণের টাকায় কেনা বন্দুক ও গুলি জনগণের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে প্রশাসন সাংবিধানিক আইন লঙ্ঘন করেছে। মোদিকে খুশি করতেই সরকার স্বাধীনতা দিবসে গুলি করে মানুষ হত্যা স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

আজ শনিবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে স্বাধীনতার ৫০তম স্বাধীনতা দিবসে বিক্ষোভরত জনতার উপরে হামলা ও নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, উত্তর সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম, দক্ষিণ জয়েন্ট সেক্রেটারী ডা. শহিদুল ইসলাম। এছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে ৬ দফা দাবি ও ২ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় : ১. চট্টগ্রামের হাটহাজারী এবং বি-বাড়িয়ায় যে সব পুলিশ মিছিলে গুলি চালিয়ে হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তাদেরকে বরখাস্তÍ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

২. হাটহাজারী থানার ওসিকে দ্রুত চাকুরী থেকে বরখাস্ত করতে হবে।

৩. প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপুরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. মোদী বিরোধী আন্দোলনে যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের দ্রুত মুক্তি দিতে হবে এবং হয়রানীমূলক সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৫. ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরকারদলীয় যে সব গুন্ডাবাহিনী সাধারণ মুসল্লীদের ওপর আক্রমন করেছে, অপমান-অপদস্ত করেছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৬. সারা দেশে সকল মানুষের সভা-সমাবেশ, মিছিল মিটিং এবং প্রতিবাদ প্রকাশের সংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

কর্মসূচী:

১. সরকারের পুলিশ বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে হাটহাজারীতে ৪ জন মাদরাসা ছাত্র এবং বি-বাড়িয়ার দু’জন মিছিলকারী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঘোষিত আগামীকাল ২৮ মার্চ-এর দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পূর্ণ সমর্থণ করছে।

. আগামী ১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ।

মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, স্বাধীনতা দিবসে বিক্ষোভ দমনে সহিংসতা ও গুলি করে মানুষ হত্যা স্বাধীনতা মর্মকে আহত করেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিক্ষোভরত জনতার ওপরে সরকর দলীয় বাহিনী ও পুলিশের সম্মিলিত হামলা ও গুলি করে মানুষ হত্যা করা স্বধীনতার মর্মকে আহত করেছে।

৭১-এর ২৬ মার্চের হানাদার বাহিনী যেভাবে আন্দোলনরত বাঙ্গালী জাতির উপরে নৃসংভাবে হামলে পড়ে ছিলো তেমনি করেই গতকালও জনতার নিরস্ত্র নিরিহ উপরে হামলে পড়েছিলো। সরকার দলীয় বাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এভাবে মানুষ হত্যা একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করলো। যার দায় আওয়ামীলীগকে চিরকাল বহন করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রতিবাদ বিক্ষোভ হলেই দলীয় বাহিনী লেলিয়ে দেয়া ও প্রশাসনকে কঠোর অবস্থানে নেয়া বর্তমান সৈরাচারি সরকারের একটি সাধারণ চরিত্র হয়ে দাড়িয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন এই জালিমশাহী জনতার যে কোন প্রতিবাদে নৃসংশতা ও হামলা করে বন্ধ করতে চায়। তারই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই কলঙ্কজনক অবাধ রচিত হলো। তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যদি এই স্বেচ্ছাচারি নিপিড়ন বন্ধ না করে তাহলে ৭১-এর চেতনায় বাঙ্গালী আবারো ঘুরে দাড়াতে পারে।

মহাসচিব বলেন, গত কালের দৃশ্য আমাদেরকে ৭১-এর ২৬ মার্চের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। দু:খজনক হলো এবার হানাদারের ভূমিকায় আওয়ামী লীগ।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, এ সরকার গণবিচ্ছিন্ন সরকার, জনগণের সরকার নয়। তারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে। মোদিকে খুশি করতে মাদরাসা ছাত্র ও মুসল্লীদের হত্যা করে সরকার মোদির অবৈধ কর্মকান্ডকে আরো উসকে দিয়েছে। সরকার দলীয় লোকজন মসজিদে ঢুকে মুসল্লীদের পিটিয়ে, দাড়ি টেনে এবং কলিঝা ছিঁড়ে খাওয়ার আস্ফালন দেখায়। এদেরকে থামান, নইলে আখের রক্ষা হবে না।