মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সা. সম্পর্কে বিজেপি নেতাদের কটুক্তি বরদাশত করা হবে না

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ০৯ ২০২২, ০০:৩১

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর পবিত্র সহধর্মীনী হযরত আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার কটুক্তির তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান বাংলাদেশের কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরিটি আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর সভাপতি, মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশ-এর আমীর ও যাত্রাবাড়ি মাদরাসার মুহতামিম মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান।

৮ জুন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মোদী সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতে মুসলিম বিদ্বেষী নীতি অনুসরণ করছে এবং সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে। ভারত মোদী সরকারের অধীনে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে পদদলিত করছে এবং মুসলিমদের নিপীড়ন করছে। মুসলিম বিশ্বের এ জন্য ভারতকে কঠোরভাবে জবাব দেওয়াই ন্যায়সঙ্গত।

তিনি আরও বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননাকারীর শাস্তি একমাত্র মৃত্যুদণ্ড। এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমা (ঐকমত্য) প্রতিষ্ঠিত আছে। মহানবীর সহধর্মীনী হযরত আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহার পবিত্রতা পবিত্র কুরআনের সূরা নূরে স্বয়ং আল্লাহ ঘোষণা করেছেন। যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শানে বেয়াদবি করবে, সমালোচনা করবে, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করবে, সে সাধারণ অপরাধী নয়, সে তো বিশ্বমানবতার শান্তির দূত রাহমাতুললিল আলামিনের সঙ্গে বেয়াদবি করেছে, যা গোটা মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধের শামিল। তাই তার অপরাধ ক্ষমাযোগ্য নয়।

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ইসলামী আইনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবমাননাকারী কাফির এবং তার শাস্তি একমাত্র মৃত্যুদণ্ড। আল্লামা ইবনে মুনজির রহ. বলেন, সর্বস্তরের উলামায়ে কেরামের ঐকমত্য হল, ইসলামে নবী করিম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবমাননাকারীর শাস্তি একমাত্র মৃত্যুদণ্ড।

খুলাসাতুল ফতাওয়া গ্রন্থে আছে, যদি কোনো ব্যক্তি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দেয়া বা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ধর্মীয় কর্মকাণ্ড নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বা তাঁর ব্যক্তিত্ব নিয়ে সমালোচনা করে, তাঁর কোনো বৈশিষ্ট্য নিয়ে দোষ চর্চা করে, সে ব্যক্তি নবীর উম্মত হোক বা অন্য কোনো নবীর উম্মত, মুসলিম রাষ্ট্রে আশ্রিত কাফের হোক বা শত্রু কাফের, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ, গালি, অবমাননাকর মন্তব্য বা বক্তব্য প্রদান ইচ্ছাকৃতভাবে হোক বা অনিচ্ছায়, বুঝে-শুনে হোক বা অসাবধানতাবশত, সর্বাবস্থায় তার এ অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য বলে ধার্য হবে দুনিয়াতেও, আখিরাতেও।

মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান বলেন, পৃথিবীর যে কোনো ভূখণ্ডে শান্তি-শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার স্বার্থে মুসলমানদের ধর্ম, ধর্মীয় গ্রন্থ, তাদের নবী ও সাহাবিদের সম্মান রক্ষার্থে কঠোর আইন অত্যাবশ্যক। অন্যথায় কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটালে মুসলমানরা রাগে, দুঃখে, ক্ষোভে ও ক্রোধে ফেটে পড়বে। শুরু হবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা। সূত্রপাত ঘটবে মারামারি হানাহানির মত ঘটনার। বিপর্যস্ত হবে মানবতা, ডেকে আনবে ভয়াবহ বিপর্যয়। তাই এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।

তিনি আরো বলেন, নবীজীর ভালোবাসায় মুসলিমরা জীবন পর্যন্ত কোরবানি করতে পারে। প্রিয় নবীকে নিয়ে কটুক্তি কোন মুসলিম মেনে নিতে পারে না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের প্রাণের চেয়েও বেশি প্রিয়। প্রিয় নবীর অপমান কোন মুসলিম সইতে পারে না। যারা এহেন জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত, ভারত সরকারের উচিত হবে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করার দুঃসাহস কেউ দেখাতে না পারে। বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম ও সর্বস্তরের মুসলমানদের পক্ষ থেকে আমি ভারত সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানাই।