ভালবাসার প্রিয় কবি – “আল-মাহমুদ” ও একটুকরো স্মৃতি

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ফেব্রুয়ারি ১৫ ২০১৯, ১৭:০৯

সম্ভবত ২০১৩ সালের কথা। প্রিয় কবি আল-মাহমুদ স্যারের সাথে একটুখানি দেখা করবার জন্যে ঢাকাস্থ গুলশান আজাদ মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় অন্তত দু’ঘণ্টা হন্য হয়ে এদিক থেকে ওদিক চুষে, ঘোড়ে, বহুও কষ্টে স্যারের বাড়ির দৌড়গোড়ায় পৌঁছাই! তবুও মনে হয়েছিল কষ্ট স্বার্থক, বাসা তো পেয়েছি। -দারোয়ান ভাইকে জিজ্ঞাস করলাম, স্যার আছে?
-না..
-কেন?
-তিনি এ বাসা ছেড়ে আদ-দ্বীন হাসপাতাল সংলগ্ন ছেলের বাড়িতে থাকেন এখন!!
-উফ!! সব কষ্ট যেন দ্বিগুণ উথলে ওঠল!!

এক বছর পর আবারও চেষ্টা…
সেই ২০১৪ সালের বইমেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকা গিয়েছিলাম মূলত প্রিয় কবি আল মাহমুদ স্যারের সাথে একটু দেখা করবার জন্যে! স্যারের একান্ত সচিব নাজমুস সায়াদাত ভাইয়ের সাথে বার কয়েক ফোনালাপ হয়। তিনি জুমার পর দেখা করার কথা বলে ফোন কেটে দিলেন।

জুমার পর বরাবর উপস্থিত হলাম!
নাজমুস সায়াদাত ভাই বেশ রসিক, আন্তরিক ও বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ। “মেসেসগুলো ডিলেট হয় স্পর্শের আগে” “মেস মেম্বার আবশ্যক” “ট্যাবলেট” উনার বইগুলো হাতে তোলে দিলেন। অনেক গল্প করলেন………।

কিন্তু ভাগ্য!
আজও দেখা করার সুযোগ হচ্ছে না। কারণ স্যারের বইমেলায় মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান আছে। দেখা করতে হলে রাত ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অথবা মেলায় গিয়ে দেখা করার সুযোগ করে নাজমুস সায়াদাত ভাই একটা কার্ড ধরিয়ে দিলেন, যা দেখালে আমাদেরকে দেখা করার সুযোগ করে দেয়া হবে।
দেরি হয়ে যাচ্ছে দেখি আর মেলায়ও গেলাম না।

চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রাওনা করলাম। আমি তখন কুমিল্লা।ওপাশ থেকে নাজমুস সায়াদাত ভাইয়ের কল দেখে কিছুটা চমকে গেলাম! তাও আবার পনেরো ষোলটি কল!! নাজমুস সায়াদাত ভাই বললেন – ছাখাওয়াত ভাই আপনি দ্রুত স্যারের বাসায় আসুন।
-আমি তো এখন কুমিল্লা।
-উফ! আপনি থাকবেন না!
-ভাই দূরের পথ তো, তাই দেরি করতে পারলাম না।
-আপনার পাণ্ডুলিপি স্যারকে দেখিয়েছি এবং স্যারকে কয়েকটা কবিতা শোনায়েছি। তিনি বেশ মনযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং আপনার সাথে কথা বলবেন।

আল-মাহমুদ স্যার কথা বলবেন শুনে আমি ভেতরে ভয় পেয়েগেছি! এত বড় মানুষ তিনি, আমি তিনার সাথে কীভাবে কী বলি? ভাবতেই ওপাশ থেকে ভরাট কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন-
-আপনি এসেছিলেন?
-জ্বী, স্যার এসছিলাম, আপনার সাথে একটু দেখা করবার জন্যে।
-তো চলে গেলেন যে?
-জ্বী, চলে এসেছি, দূরের পথ তো তাই। তাছাড়া এখানে থাকবার মত কেউ নেই !
-তো কী জন্যে এসেছিলেন?
-আমার কবিতার পাণ্ডুলিপিটা আপনাকে দেখাবার জন্যে এসেছিলাম।
-হ্যাঁ পাণ্ডুলিপি তো দেখলাম ..আর কিছু বলার থাকলে নাজমুস সায়াদাতকে বলে দিন…….

এতটুকুতেই কথা শেষ হয়েছিল। মন অনেক বড় হয়ে গিয়েছিল স্যারের সাথে কথা বলে। পরে পাণ্ডুলিপিতে স্যার অভিমত পেশ করলেন…..।

সাখাওয়াত আজিজ
লেখক ও সাংস্কৃতিকর্মী