বালাগঞ্জের বড়ভাঙ্গা নদীতে ‘শেখ হাসিনা সেতু’র নির্মাণ কাজ বন্ধ; আন্দোলনে নামছেন এলাকাবাসী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ২৬ ২০২১, ২১:০১

আবুল কাশেম অফিক,বালাগঞ্জ (সিলেট): সিলেট-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ সড়কের সর্বশেষ প্রান্তে বড়ভাঙ্গা নদীর অবস্থান। এই বড়ভাঙ্গাতে কোনো সেতু না থাকায় সরাসরি যাতায়াত বিচ্ছিন্ন বালাগঞ্জের ৩টি ইউনিয়নের জনসাধারণ। সেতু না থাকার কারণে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অত্রাঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন স্থরের জনসাধারণের। এমনকি জরুরী সেবা প্রদানের জন্য বালাগঞ্জ থানা পুলিশও উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ও দেওয়ানবাজার ইউনিয়নে সরাসরি গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করতে পারে না। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, স্কুল কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন দপ্তরে যাতায়াতেও দেখা দিয়েছে চরম দূর্ভোগ। এ দুটি ইউনিয়নে বড়ভাঙ্গা নদীপথে যেতে নৌকা এবং গাড়ি নিয়ে যেতে হলে পার্শ্ববর্তী ওসমানীনগর উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়ন হয়ে দেওয়ানবাজার ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়ন হয়ে পশ্চিম গৌরীপুরে পৌঁছাতে হয়। এতে যেমন ব্যয় হয় সময়ের, তেমনি ব্যয় হয় অর্থের। এই বড়ভাঙ্গা নদীই দুইভাগে বিভক্ত করে রেখেছে বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নকে।

এ দূর্ভোগ লাঘবে ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণ করে ২ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা বাজেট নিয়ে বালাগঞ্জ-সুলতানপুর-সিলেট সড়কের বড়ভাঙ্গা নদীর উপর “শেখ হাসিনা সেতু” নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন তৎকালীন সিলেট-২ আসনের এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া ও সিলেট- ৩ আসনের বর্তমান এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। আশা জাগে অত্রাঞ্চলের জনসাধারণের। বুকে আশার সঞ্চার করে তারা দিন গুনতে থাকেন! কবে তাদের স্বপ্নের বড়ভাঙ্গা নদীতে “শেখ হাসিনা সেতু” নির্মিত হবে? কিন্তু অদৃষ্টের কী নির্মম পরিহাস! সেই দিনগণনা আর যেন ফুরিয়ে যায় না। কোনো এক অদৃশ্য কারণে আটকে যায় সেতুটির নির্মাণ কাজ। স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায় অত্রাঞ্চলের হাজারো মানুষের।

২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল যারা স্বপ্ন দেখিয়েছিলের, তারা কেউ কেউ হয়তো আজ আর নেই। কেউবা চলে গেছেন তাদের কর্মস্থল বালাগঞ্জ ছেড়ে অন্যত্র , আবার মেয়াদ শেষ হওয়ায় কেউ কেউ ছেড়েছেন ক্ষমতা, কেউবা আছেন আবার কেউ দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু রয়ে গেছে দূর্ভোগ। যার ফলাফল ভোগ করছেন অত্রাঞ্চলের মানুষজন।

শেখ হাসিনার নামে নামকরণ করে সেতুর কাজ শুরু করে কয়েকটি পিলার বসিয়ে (ফাইলিং) কাজ বন্ধ রাখার বাহাস কষ্ট দিয়েছে বালাগঞ্জের মানুষকে। যতই সময় গণিয়ে যাচ্ছে ততই হাজার হাজার মানুষের গণদাবিতে পরিণত হয়ে উঠেছে “শেখ হাসিনা সেতু”র বাস্তবায়ন।

আন্দোলিত হয়ে উঠছেন এ পথ দিয়ে যাতায়াতকারী হাজারো মানুষ।

দীর্ঘদিন যাবত সেতুটির কাজ বন্ধ থাকায় ও দূর্ভোগ চরম সীমায় পৌঁছে যাওয়ায় বালাগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ ও ৩ ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থরের জনসাধারণ গত সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে স্থানীয় আয়না মার্কেট এক সভায় মিলিত হয়ে “শেখ হাসিনা সেতু” বাস্তবায়নের আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

প্রথম অবস্থায় তারা সংশ্লিস্ট বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি, উপজেলা সদরে সকল পর্যায়ের লোকজনের উপস্থিতিতে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহনের ঘোষণা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী এস আর এম জি কিবরিয়া বলেন, সেতুটির রি-ডিজাইন করতে হবে। আগের ডিজাইন সেতুটি নির্মানের জন্য উপযুক্ত নয়। আগের সম্পুর্ন কাজ বাতিল করে সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হবে। পাশাপাশি এটি বাস্তবায়নে আরও বাজেটের প্রয়োজন।