বসুন্ধরার করোনা হাসপাতালের ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

এপ্রিল ২৭ ২০২০, ০৭:৫৯

করোনভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মাণাধীন দেশের বৃহত্তম চিকিৎসাকেন্দ্রের নির্মাণকাজ ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আজ-কালের মধ্যে প্রস্তুত হলেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে হাসপাতালটি বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে আইসিসিবির নির্মাণাধীন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রেড সেন্টারের তিনটি ব্লকেই বসানো হয়েছে ফ্লোর ম্যাট। তৈরি হয়ে গেছে হেল্প ডেস্ক, নার্সদের বসার ডেস্ক। বসানো হয়েছে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের কক্ষ। এছাড়া তাঁবুর বাইরে বেডগুলোর বিভিন্ন অংশ যুক্ত করা হচ্ছে। এগুলো যুক্ত হলেই বেডগুলো নিয়ে ট্রেড সেন্টারের মধ্যে বসানো হচ্ছে।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম রবিবার বিকালে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ করতে আমরা বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও রাত দিন কাজ করেছি। কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় বাইরের কাজগুলো পিছিয়ে গেছে। তারপরও আমরা কাজ শেষ করে এনেছি।

মাসুদুল আলম বলেন, এখন আমাদের সবগুলো বেড চলে এসেছে। পুরো সেন্টারে ফ্লোর ম্যাট বসানো হয়ে গেছে। বেডগুলোর বিভিন্ন অংশ আলাদা আলাদা এসেছে। এখন শুধু সেগুলো যুক্ত করে বেডগুলো ট্রেড সেন্টারের মধ্যে বসানো হচ্ছে। এই মাসের মধ্যে হাসপাতাল চালুর যে লক্ষ্য ছিল, আমরা এখনো সেখানেই আছি।

আইসিসিবি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, ১২ শতাধিক বেড বসানো হয়ে গেছে। বাকি বেডগুলো চলে এসেছে। এখন শুধু অ্যাসেম্বল করে বসানো হচ্ছে। বলা যায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি আজকালের মধ্যে হাসপাতাল প্রস্তুত হয়ে যাবে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বুঝে নিয়ে চালু করলেই চিকিৎসাসেবা দেওয়া যাবে। একই ফ্লোরে অনেক রোগীর শয্যা থাকায় কম চিকিৎসক-নার্স দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া যাবে। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালটির উদ্বোধন করবেন। দুই-একদিনের মধ্যে সেই তারিখ আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পেয়ে যাব বলে প্রত্যাশা করছি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেয়া তথ্যানুযায়ী, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে দুই হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে এক হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়।

নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে দুই হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ১৫ দিনের মধ্যে আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

কোভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে ততদিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছে কনভেনশন সেন্টারটি।