ফ্রান্সে মহানবী সা.-এর কল্পিত কার্টুন প্রদর্শন: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের করণীয়

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

অক্টোবর ২৪ ২০২০, ২৩:১৮

ইমদাদুল হক নোমানী: ফ্রান্সে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপক ড. স্যামুয়েল প্যাটি হযরত মুহাম্মদ সা.-এর কল্পিত চিত্র প্রদর্শন করার জন্য আব্দুলাখ (আব্দুল হক) নামে ১৮ বছর বয়সী চেচেন এক তরুণ ঐ শিক্ষককে হত্যা করে। হত্যাকারীও ঘটনাস্থলে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।

আইন নিজ হাতে তুলে নিয়ে এ হত্যাকান্ড সমর্থন করা যায় না। বিচারবহির্ভূত হত্যা ইসলাম সমর্থন করে না। একজন মুসলমান হিসেবে নবীপ্রেম থাকাটা স্বাভাবিক। তাই বলে আবেগের কাছে বিবেককে বলি দেয়া ঠিক হয়নি। এতেকরে ফ্রান্সে অধিবাসী মুসলিমসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হলো।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে ফ্রান্সে প্রায় একশত মসজিদ এবং ইসলামিক স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। হেরাল্ট অঞ্চলে মসজিদ ও স্কুলসহ মুসলিম মালিকানাধীন অনেকগুলো দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফ্রান্সে বসবাসরত ২৩১ বিদেশিকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে; যাদের মধ্যে ১৮০ জন জেলে রয়েছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ফ্রান্স নবী মুহাম্মদ-এর কার্টুন প্রদর্শন বন্ধ রাখবে না। স্যামুয়েল প্যাটির খুনি ইসলামপন্থী উগ্রবাদীরা আমাদের ভবিষ্যৎ কেড়ে নিতে চায়। আমরা তা হতে দিতে পারি না।

প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, মসজিদগুলোর বৈদেশিক তহবিল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সরকার দেশটির বিভিন্ন স্কুল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেবে। সেই সাথে ফ্রান্সের মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইন তৈরির বিষয়টিও নিয়ে সরকার কাজ করবে।

আবেগি তরুণের এ হত্যাকাণ্ড যেভাবে সমর্থন করা যায় না তেমনিভাবে একজন দায়িত্বশীল প্রেসিডেন্টের বালখিল্য এসব বক্তব্য এবং একগুয়েমি সিদ্ধান্তও মেনে নেয়া যায় না। একজনের অপরাধের কারণে গোটা মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন এবং মসজিদ, স্কুল ও দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া কোন সভ্য দেশের নীতি হতে পারে না।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অপরাধ স্বীকার করে কার্টুন প্রদর্শন বন্ধ করুন। মুসলিম নির্যাতন বন্ধ করে মসজিদ, মুসলিম স্কুল এবং মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে সভ্যতার পরিচয় দিন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখুন।

ফ্রান্স সরকারের প্রতি এসব দাবী জানিয়ে মুসলিম বিশ্ব জেগে ওঠা দরকার। বাংলাদেশে ফ্রান্স দূতাবাসের মাধ্যমে ফরাসি সরকারকে বাধ্য করতে স্মারকলিপিসহ বুদ্ধিভিত্তিক প্রয়োজনীয় কর্মসূচি নেয়া সময় ও ঈমানের দাবী মনে করি। আশাকরি দায়িত্বশীল হযরাতগণ এ বিষয়ে একটু ফিকির করবেন।