পুজামণ্ডপে কুরআন অবমাননায় প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের গুলি: নিহত অন্তত তিন, আহত অর্ধশত

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ১৪ ২০২১, ০৯:২৯

কুমিল্লায় পুজামণ্ডপে কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে অনুষ্ঠিত মিছিলে পুলিশের গুলিতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রায় অর্ধশত তৌহিদী জনতা।

পুলিশের গুলিতে নিহতরা হলেন- বাবলু (২৮), আল আমিন (১৮) ও শিশু হৃদয় (১৪)।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কলরবের আবু সুফিয়ানসহ অনেকের টাইমলাইনে ৭ জন নিহতের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। অনেকেই মন্তব্য করে জানাচ্ছেন যে নিহত মোট ৭ জন। এরমধ্যে পাঁচ জনের ছবি পাওয়া গেলেও সবার পরিচয় জানা যায়নি। ছবিতে থাকা সবাই মৃত কিনা তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে সহিংস পরিস্থিতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সোহেল আহমেদ চিশতী বলেন, হাসপাতালে চারজন ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন মারা গেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মজিবুর রহমান পাটোয়ারী জানান, বুধবার সন্ধ্যায় হঠাৎ হাজীগঞ্জ বাজারে একটি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে হাজীগঞ্জ মধ্য বাজার মন্দিরের সামনে গেলে হট্টগোল শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে গেলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা রাবার বুলেট ছুড়েছে। এতে মিছিলে থাকা রায়চোঁ গ্রামের আল আমিন (১৮), হোটেল শ্রমিক চাপাইনবাবগঞ্জের বাবলু (২৮) ও পথচারী শিশু রান্ধুনীমুড়া গ্রামের ফজলুর ছেলে হৃদয় (১৫) গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদেরকে হাজীগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে রাতে হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজার বিশ্বরোড এলাকায় গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।

পরিস্থিতি শান্ত করতে হাজীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মো. মাঈনুদ্দিন, পৌর মেয়র আ স ম মাহবুব উল আলম লিপনসহ নেতারা ও পুলিশ প্রশাসন প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

হাজীগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, মৃত্যুর কথা শুনেছি। তবে কয়জন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনও।

এদিকে সহিংস পরিস্থিতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

একই সঙ্গে বুধবার রাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানিয়েছেন।

হাজীগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ রাতে বলেন, হাজীগঞ্জ বাজারের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।