ন্যূনতম লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করুন: ইসিকে মির্জা ফখরুল

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১১ ২০২১, ১৬:১০

নির্বাচনি ব্যবস্থার ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পদত্যাগ দাবি করে বলেছেন, ‘লজ্জা থাকলে পদত্যাগ করুন।’

সোমবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ দাবি করেন। নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে এই মানববন্ধন আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে একটি রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আর সে কাজে সহযোগিতা করছে ‘বশংবদ’ নির্বাচন কমিশন। তারা পুরো নির্বাচনি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষভাবে করছে না। সরকারের সোল এজেন্ট হিসেবে তারা কাজ করছে। তাদের ওপর জনগণের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই।”

‘আজকে সমাবেশের মধ্যে দিয়ে বলতে চাই— নির্বাচন কমিশনের যদি ন্যূনতম লজ্জা থাকে, তাহলে তাদের এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে উচিত’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এদেশের সবচেয়ে ঘৃণিত একটি প্রতিষ্ঠান। আমরা বারবার নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ চেয়েছি, সরিয়ে দিতে বলেছি। শুধু আমরা রাজনীতিবিদরাই নই, দেশের যারা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী আছেন, দেশের যে এনজিও আছে এমনকি বিদেশের সংস্থাগুলো বলছে- এই নির্বাচন কমিশনকে না সরালে দেশে কখনোই সুষ্ঠ নির্বাচন হবে না। যখন এই কমিশন গঠন করা হয়, তখন আমরা বলেছিলাম সম্পুর্ণ পক্ষপাতিত্ব ভাবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশন কখনই সুষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই কমিশন শুরুতে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাদের সেই যোগ্যতা নেই যে তারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। জাতীয় নির্বাচন গেছে, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন তারা একইভাবে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। ভোট চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পর সিইসি বলেন- ‘ভোট সুষ্ঠু হয়েছে’।”

‘এতই সুষ্ঠু হয় যে, কোনো কোনো কেন্দ্রে শতকরা ১০০ ভাগের বেশিও ভোট পড়ে’— বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘আজকে আরেকটি বিশেষ কালো দিন। ২০০৭ সালের এই দিনে একটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মধ্যে দিয়ে, সেনা সমর্থিত একটি অবৈধ ও বেআইনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়েছিল। যারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে সচেতনভাবে বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করেছিল। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পথ ধরে আজকে আওয়ামী লীগ একইভাবে বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।’

সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনও সময় আছে আপনারা পদত্যাগ করুন। না হলে এদেশের মানুষ আপনাদের সরে যেতে বাধ্য করবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আসুন সব রাজনৈতিক দল মিলে আমরা এই সরকারকে বিদায় দেওয়ার জন্য বৃহত্তর ঐক্য গঠন করি। আমাদের ভোটাধিকার রক্ষা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই সরকার সরানোর আন্দোলন করি।’

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য দেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, কৃষক দলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ,ইকবাল হোসেন শ্যামল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিমসহ অন্যরা।