ধর্ষণ এখন জাতীয় সমস্যা: নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর সমালোচনা নয়, সমস্যার গোড়া খুঁজে সমাধান করুন!

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ১২ ২০১৯, ২১:৩৫

ইলিয়াস সারোয়ার:

এই যে প্রতিদিন এত এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে এবং এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে, এটা কার দোষে? সমস্যা কোথায়? জনগণের নাকি জনগণ নিয়ন্ত্রক প্রশাসন তথা সরকারের?

বিবিসির খবর- গত ৮ বছরে ৬ জেলায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৷ কিন্তু বিচার হয়েছে মাত্র ৫ জনের! বাংলাদেশে বিচারহীনতার উদাহরণ এরচে’ আর বেশি কিছু লাগবে? অপরাধ সংঘটিত হবার পর বিচারই যদি না হয় তাহলে ধর্ষণ বাড়বে না কেন? যারা একবার এই অপরাধ করে পৈশাচিক ‘মজা’ লুটে সহজেই পার পেয়ে গেছে তারা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরণ করলেই বা অবাক হবার কী থাকে?

অনেকেই হুজুরদের নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ৷ আচ্ছা, ৬ টি জেলার এই পরিসংখ্যানে সাড়ে ৪ হাজার ধর্ষণের ঘটনার মধ্যে ১০ জন হুজুর থাকা কি খুব বেশি অস্বাভাবিক?

হুজুরদেরও কামভাব আছে ৷ মসজিদ কমিটি বা মাদরাসার মুহতামিম তো তাকে নিয়মিত ছুটিও দেয় না যে, বেচারা প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার তার স্ত্রীর কাছে যাবে ৷ আবার ফ্যামিলি নিয়ে থাকার মত বাসাও মসজিদ/মাদরাসার নাই ৷ বাসা ভাড়া করে থাকার মত বেতনও দেয় না কর্তৃপক্ষ ৷ অধিক বাড়িছাড়া থাকার কারণে কামভাব তার জাগেও অধিক ৷ তো এই পরিস্থিতিতে কামভাব জাগার পর সে কী করবে? নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করবে তো? কিন্তু এভাবে কত বার পারা যায়? খোদাভীতির উপর শয়তান জয়ী হয়ে যায় মাঝেমধ্যে ৷ তখনই ঘটে যায় দু-চারটে অনৈতিক ঘটনা ৷ কেউ কেউ পরে আবার অনুতপ্তও হয় ৷ প্রকাশ্যেই বলে- আমার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ ৷

সুতরাং এসব বিচ্ছিন্ন কয়েকটা ঘটনা দেখে পুরো হুজুর জাতির দোষ দিয়ে লাভ নাই ৷ সমস্যার কারণ খুঁজে বের করে সমাধান করার চেষ্টা করুন! অযথা সমালোচনা করে কী লাভ?

তাছাড়া সব হুজুর কেন, অধিকাংশ হুজুরও তো খারাপ নয় ৷ ভালো চালের মধ্যেও কিছু ‘চোচা’ থাকতেই পারে ৷ সেগুলো ঝেড়ে/বেছে ফেলে দিলেই হয় ৷ দু-চারটে ‘চোচার’ জন্য সব চাল ফেলে দেয়ার কোন মানে হয়?

মূল সমস্যা কোথায়?

বিচারহীনতা তো অবশ্যই ৷ এর পাশাপাশি সহজলভ্য ইন্টারনেট সংযোগ, মোবাইলে অবাধ পর্ন সাইট ব্রাউজের সুযোগ, স্কুল-কলেজে ছেলে-মেয়েদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ করে দেওয়া, নানা ধরনের সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামের নামে-মেলার নামে নাচ-গানের মাধ্যমে কাছে আসার সুযোগ তৈরি করে দেয়া, ছেলে মেয়েদের একসাথে পাঠ্যপুস্তুকে যৌনবিষয় শিক্ষা দেওয়া ইত্যাদি নানাবিধ কারণ রয়েছে বলে মনে করেন বিজ্ঞমহল। এসব সমস্যার সমাধান করলেই ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির সংখ্যা কমে আসবে বলে আশা করা যায় ৷