দুর্গাপুর থানার জমি দখলের চেষ্টা ছাত্রলীগ নেতার, নেপথ্যে ১০ লাখ টাকার বাণিজ্য 

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ২৭ ২০২০, ১৩:১৩

দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :  রাজশাহীর দুর্গাপুর থানা পুলিশের নিজস্ব জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফের বিরুদ্ধে এই জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ২০ লাখ টাকা মূল্যের থানার ওই জমি দখলের জন্য থানার ওসি, থানার এক এসআই ও থানার এক দালালের মধ্যে ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও জানা গেছে।

জানা গেছে, দুর্গাপুর থানা ভবনের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে কালিদহ মৌজায় সরকারি খাস জমি রয়েছে। যে জমিটি মাঠিয়াল হিসেবে পরিচিত। পৌর এলাকার আমিনুল ইসলাম অনু নামের এক ব্যাক্তি ওই জমিটি উপজেলা ভূমি অফিস থেকে লীজ নিলেও কখনো দখল নেননি। এমনকি মাঠিয়াল হওয়ায় ওই জমিতে কোন স্থাপনা বা কোন ফসলও ছিলো না।

২০১৩ সালে থানার তৎকালীন ওসি সাইফুল ইসলাম ওই খাস জমিটি ভরাট করে থানার জমি হিসেবে বাউন্ডারি দেন এবং এক ওয়ার করার জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে ওই জমির এক পাশে গ্যারেজ ঘর নির্মাণ করেন ওসি পরিমল কুমার চক্রবর্তী। তিনিও জমিটি থানা পুলিশের সম্পদ হিসেবে আগলে রাখেন।

প্রায় এক বছর আগে সরকারের কাছ থেকে খাস জমিটি লীজ পত্তন নেয়া আমিনুল হক অনু মারা গেলে তার ওয়ারীশদের কাছ থেকে জমিটি জাল দলিলের মাধ্যম লিখে নেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফ।

রোববার সকালে শ্রমিক নিয়ে ওই জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে যায় ছাত্রলীগ নেতা শরিফ। খবর পেয়ে থানার ওসি (তদন্ত) মাহমুদুল হাসান শ্রমিকদের কাজে বাধা দেন। পরে খবর পেয়ে পুঠিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহীদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এছাড়া ওই কাজে বাধা না দিয়ে নিরব ভূমিকা পালন করায় থানার ওসি খুরশীদা বানু কণাকে ভর্ৎসনা করেন।

এদিকে, জানা গেছে ওই জমিটি নিজের দখলে নিতে ছাত্রলীগ নেতা শরিফের সাথে থানার ওসি কণা ও এসআই সাইফুলের সাথে গোপনে ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ কারনে থানার জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার সময় তাতে বাধা না দিয়ে নিরব ছিলেন ওসি কণা। আর এই কাজে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ভাবে সহযোগিতা করেছেন থানার দালাল হিসেবে পরিচিত রুস্তম। তার হাত দিয়েই টাকা লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ওসি (তদন্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, থানার জমি দখল করে নিবে প্রভাবশালীরা এটা হতে পারেনা। প্রভাবশালী যেই হোক, তিনি কোন রাজনৈতিক দলের লোক তা দেখার সুযোগ নাই। এ কারণে আমি জমি দখলের কাজে বাধা দিয়েছি এবং ঘটনাটি আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

থানার ওসি খুরশীদা বানু কণার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পুঠিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহীদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিবেন।