থ্যালাসেমিয়া বাচ্চাদের আর্তনাদ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ১২ ২০২০, ১৬:৩৮

অভিজিৎ রয়; অক্সিজেন ছাড়া যেমন মানুষ বাঁচতে পারে না, ঠিক তেমনি রক্ত ছাড়া থ্যালাসেমিয়া রোগীগুলো বাঁচতে পারে না। রক্তের গুরুত্ব আমরা সকলেই বুঝি। কিন্তুু আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো থ্যালাসেমিয়া কি সেটাই জানি না। থ্যালাসেমিয়া হলো একটি বংশগত রোগী। এই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের রক্ত উৎপাদন হয় না শরীরে। আমাদের যেমন সাধারণ ভাবেই ব্রোণমেরুতে প্রতিনিয়ত রক্ত উৎপাদিত হয়, কিন্তু থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বাচ্চাদের ব্রোণমেরুতে রক্ত উৎপাদিত হয় না। ফলে প্রতিনিয়ত ওদের রক্তের প্রয়োজন হয়।কিছু থ্যালাসেমিয়া বাচ্চার ২০ দিন পর পর আবার কিছু থ্যালাসেমিয়া বাচ্চার ১ মাস পর পর রক্ত প্রয়োজন। রক্তই একমাত্র ওদের বেঁচে থাকার উৎস।

শুধুমাত্র সিলেট মুজিব জাহান রেডক্রিসেন্ট রক্ত কেন্দ্র এ ৩০০ এর ও অধিক থ্যালাসেমিয়া রোগী আছে যাদের প্রতি মাসে রক্তের প্রয়োজন৷ জানেন তো? রক্ত কৃত্রিমভাবে তৈরি করা যায় না আর রক্ত তৈরি করার মেশিন ও বিজ্ঞানীরা আজ অব্দি আবিষ্কার করতে পারেন নি। আপনার, আমার, আমাদের সকলের দানকৃত রক্তেই থ্যালাসেমিয়া বাচ্চাগুলো বেঁচে আছে।

দেশের এই কঠিন পরিস্থিতির চারিদিকে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক আর বিভাগীয় সিলেট শহর এখন ফাঁকা। বেশীর ভাগ রক্তদাতারাই বাড়িতে এখন। অনেকেই ভয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কিন্তুু রক্ত তো আর করোনার প্রভাব বা লক ডাউন কি তা বুঝে না। থ্যালাসেমিয়া বাচ্চাগুলোকে প্রতি মাসে রক্ত না দিলে ওরা দূর্বল হয়ে যায়। স্বাভাবিক জীবনযাপনে ওদের ব্যাঘাত ঘটে।

সবচেয়ে দুঃখের বিষয় কি জানেন ? এপ্রিল মাস এর শেষ সপ্তাহ থেকে পবিত্র রমজান মাসের শুরু। এই সময়, অনেকের মনে ভুল ধারণা কাজ করে যে, রক্ত দিলে রোজা ভেঙ্গে যায়। কিন্তুু প্রকৃত সত্য হলো – পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে ও রক্তদান করা যায়। এতে রোজাদার ব্যক্তির অযু ভাঙ্গে, রোজা ভাঙ্গে না। তবে খুব বেশী জরুরি না হলে সন্ধ্যার পর রক্তদান করা উত্তম।

এই সকল পরিস্থিতিতে রক্তদাতা যোগাড় করা খুবই কষ্ট হচ্ছে। আপনাদের সকলের প্রতি অনুরোধ – এই কঠিন সময়ে স্বেচ্ছায় রক্তদানের মতো মহৎ কাজে এগিয়ে আসুন । খুব সংকট দেখা দিচ্ছে বর্তমানে রক্তের। আসুন, স্বেচ্ছায় রক্তদান করি, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পরিবারের মুখে হাসি ফোঁটাই। আপনাদের দানকৃত রক্তই থ্যালাসেমিয়া বাচ্চাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।