তারবিহীন অন্যরকম সিলেট

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ০৭ ২০২০, ১৫:৪৮

সিলেটের দরগাহ মহল্লা এলাকা থেকে ছবিটি তুলেছেন জুনাইদ শামসী

নগরীতে প্রথমবারের মতো আন্ডারগ্রাউন্ড (ভূগর্ভস্থ) বিদ্যুৎ লাইন চালু হয়েছে। তারের জঞ্জাল কমিয়ে নগরীকে একটি স্মার্ট ডিজিট্যাল সিটি হিসেবে গড়ে তোলাই এর মূল লক্ষ্য। এরই মধ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার এলাকায় পূর্ণাঙ্গ ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইনের সরবরাহ শুরু হয়েছে। সেই সাথে এই এলাকার বিদ্যুতের খুঁটিসহ অন্যান্য সার্ভিস লাইনের তারও অপসারণ করা হয়েছে।

গত ৫ জানুয়ারী (রবিবার) সকালে পূর্ণাঙ্গ সরবরাহ ও বিদ্যুতের খুঁটি অপসারনের কাজ পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিসিকের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌকিুল হাদী, দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা ও শাহজালাল দরগাহ এলাকার ব্যবসায়ীবৃন্দ।

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, হযরত শাহজালাল (রঃ) মাজার এলাকা থেকে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের সফল সরবরাহ চালু হয়েছে। উন্নত রাষ্ট্রের আদলে দেশের প্রথম ভূ গর্ভে বিদ্যুৎ লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তুলে নেয়া হচ্ছে রাস্তার দুপাশের বিদ্যুতের খুঁটি ও অন্যান্য সার্ভিসেস লাইনের তার। ফলে তারের জঞ্জাল থেকে মুক্ত হয়েছে শাহজালাল মাজার এলাকা। বেড়েছে এই এলাকার সৌন্দর্য্য।

মেয়র বলেন, গত ১৫-২০ দিন ধরে পরীক্ষামূলক সরবরাহ পর্যবেক্ষনের পর রবিবার থেকে পূর্ণ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। শাহজালাল মাজার এলাকা থেকে কোর্ট পয়েন্ট পর্যন্ত পাইলট প্রকল্পে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতের লাইন চালু করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সব এলাকায় বাস্তবায়ন করা হবে এই সুবিধা।

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, এখন থেকে কোন ব্যক্তি বা সার্ভিসেস প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশনকে অবহিত না করে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন গিয়েছে এমন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করতে পারবেন না। যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবিচ্ছিন্ন রাখা যায় তার জন্য সকলের সহযোগিতা চান সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদি বলেন, সিলেট নগরীকে ডিজিটাল নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সিসিক এক ধাপ এগিয়ে গেল। ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিলো। প্রকল্পটি এই ওয়ার্ড থেকে শুরু করায় সিসিক কতৃপক্ষ তথা সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নূর আজিজুর রহমান বলেন, ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন চালু করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। যা অত্যন্ত সফলতার সাথে বিদ্যুৎ বিভাগ, সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় সম্পন্ন করতে পেরেছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করতে বিদ্যুৎ বিভাগকে সার্বক্ষনিক নজরদারী রাখতে হবে। এর জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ও সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে নগরীতে ১১ কেভি ২৫ কিলোমিটার, শূন্য দশমিক ৪ কেভি ১৮ কিলোমিটার ও ৩৩ কেভি ২ সার্কিট কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হবে।

নগরীর ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই এলাকার বিদ্যুৎ সাব স্টেশন কেন্দ্র থেকে ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন আম্বরখানা হয়ে যাবে চৌহাট্টায়। চৌহাট্টা থেকে একটি লাইন যাবে নগরীর জিন্দাবাজার-কোর্ট পয়েন্টে হয়ে সিলেট সার্কিট হাউজ পর্যন্ত। আরেকটি লাইন চৌহাট্টা থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত যাবে।