ডাচ-বাংলা ব্যাংক বন্ধ থাকবে ৪ দিন: সেবাবঞ্চিত আড়াই কোটি গ্রাহক

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ১৪ ২০১৯, ০৭:২৫

আবির আবরার:তথ্য ভাণ্ডার আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যে কাজের জন্য লাগাতার চার দিনের জন্য বন্ধ হতে যাচ্ছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সব ধরনের লেনদেন। এই সময়ে ব্যাংকটির এটিএম বুথ থেকে কোনো গ্রাহক টাকা তুলতে পারবেন না। শাখায় গিয়েও টাকা তুলতে বা জমা দিতে পারবেন না। ব্যাংকটির ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড দিয়ে কোন কেনাকাটাও করা যাবে না। এমনকি এজেন্ট ব্যাংকিং এবং মোবাইল সেবা রকেটও থাকবে বন্ধ।

বুধবার সন্ধ্যায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিস্টেম আপগ্রেড-এর জন্য আগামী ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ১৯ মার্চ মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ব্যাংকের শাখা, এটিএম, পস (পিওএস) এবং এজেন্ট ব্যাংকিংসহ সব প্রকার ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছে ডাচ-বাংলা কর্তৃপক্ষ। ঘোষণাটি মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকদেরও জানিয়েছে তারা।

চার দিন সেবা বন্ধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও গ্রাহকদের কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোন তথ্য ডাচ-বাংলার কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। এই সময়ে গ্রাহকদের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও থাকছে না।

ডাচ বাংলার কর্মকর্তারা মনে করছেন, দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি এবং তারপর দিন সাধারণ ছুটি হওয়ায় গ্রাহক ভোগান্তি কম হবে মনে করেই তারা এই সময়টি বেছে নিয়েছেন কাজটির জন্য। ১৫ ও ১৬ মার্চ (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১৭ মার্চ রোববার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সাধারণ ছুটি। তবে পরদিন ১৮ মার্চ সোমবার সব কিছুই খোলা থাকবে।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন ভবিষ্যতের সুরক্ষার জন্য গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, “আমাদের ব্যাংকের গ্রাহকদের ভবিষ্যৎ সুবিধার জন্য এটি সাময়িক সমস্যা। আমরা বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো একটি খুবই অত্যাধুনিক তথ্য ভাণ্ডার বা ডেটা সেন্টার গড়ে তুলেছি, যাকে পিআইইআর ফোর ডেটা সেন্টার বলা হয়। এতদিন সাভারে আমাদের একটা ডেটা সেন্টার ছিল। এ অবস্থায় যদি কোনো কারণে সেটা ফেইল করত তাহলে কিন্তু সিস্টেম চালাতে সমস্যা হয়ে যেত। তাই আমরা প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ করে এই পিআইইআর ফোর ডেটা সেন্টার গড়ে তুলেছি, যাতে কখনও আমাদের সাভারের ডেটা সেন্টার ফেইল করলে যেন গ্রাহকদের কোন সমস্যা না হয়।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়েই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান বেসরকারি এই ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ডাচ-বাংলা ব্যাংককে অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলামও।

এতে ব্যাংকটির গ্রাহকদের অসুবিধার কথা স্বীকার করেই তিনি বলেন, “টানা কয়েক দিন বন্ধ থাকায় তাদের সমস্যা হবে। তবে তারা (ডাচ-বাংলা) কয়েক দিন আগে থেকেই গ্রাহকদের জানিয়েছে। গ্রাহকরা এক ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে নিশ্চয়ই।”

প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা এখন ২ কোটি ৫০ লাখ বলে এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সারাদেশে এ ব্যাংকের শাখা রয়েছে ১৮৪টি। এছাড়া ৫ হাজারের মতো এটিএম বুথ এবং ৮০০টি ফাস্ট ট্র্যাক সার্ভিস রয়েছে ব্যাংকটিতে।