টিভি চ্যানেলগুলোর সুদুরপ্রসারি ষড়যন্ত্র; আলেম সমাজের ভবিষ্যৎ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ০৬ ২০১৯, ০০:৫৭

মাওলানা বিল্লাহ আবু জারাহ:
এ সময়ের সেরা ইসলাম বিরুধী হলুদ মিডিয়া ছিলো
“৭১টিভি”। ইলেক্ট্রনিক স্যাটেলাইট মিডিয়া জগতে ৭১ টিভি ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেমন সবসময় ছিলো সোচ্চার এখনো আছে, তেমনিভাবে মিডিয়া জগতের আরেক বর্তমান হলুদ মিডিয়ার নাম “যমুনা টিভি”। যে টিভি চ্যানেলটিকে দেখলাম ইদানিং ৭১টিভির সেই বিষাক্ত পদাঙ্কটিরই অনুসরণ করছে!

এ টিভি চ্যানেলটি সম্ভবত নিষিদ্ধ ঘোষিত পণ্য-নেশা জাতীয় পানিয় “ক্রাউন-হান্টার” উৎপাদন কারী কোং যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ভুমি দস্যু নজরুল ইসলাম বাবুলের যমুনা গ্রুপ দ্বারাই পরিচালিত হয়।

এই যমুনা টিভি ইসলাম ও আলেম উলামা বিদ্বেষী একদল নাস্তিক সাংবাদিকদের দ্বারা পরিচালিত টিভি চ্যানেল হিসাবে ইতোমধ্যে ইসলাম ও ধর্মীয় মহলে পরিচিতি লাভ করেছে।

বাংলাদেশের সকল আলেম-উলামা,
ফুজালা-তুলাবাদের সকলেরই জানা কথা! নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রবাদী “হরকাতুল জেহাদ(হুজি) নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আফগান ফেরত মুজাহিদ শহীদ আবদুর রহমান ফারুকী রহ.।

শহীদ আবদুর রহমান ফারুকী রহ. যিনি একই সাথে ছিলেন হরকাতুল জেহাদ নেতাদের পরিচালিত “মাসিক জাগো মোজাহিদ-(মাসিক রহমত)” পত্রিকারও প্রতিষ্ঠাতা।

যেখানে অন্য একজন ব্যাক্তি ছিলেন হুজির প্রতিষ্ঠাতা! সেখানে হঠাৎ করে আল্লামা শায়খুল হাদীস রহ.এর ইন্তেকালের দীর্ঘ প্রায় এক যুগেরও কাছাকাছি সময়ে এসে জান্নাতবাসী আমাদের শায়খকে হুজির প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিতে চেষ্টা করার উদ্দেশ্য আসলে কি!

আজ হঠাৎ করে এসে যুমনা টিভি কেন এমন মিথ্যা বা বানোয়াট তথ্যের মাধ্যমে হযরত শায়খু্ল হাদীস রহ.কে এ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা বানাতে চাচ্ছে! এটা নিশ্চয় বিশাল দুরভিসন্ধিমূলক কিছুর প্রতিই ইঙ্গিত প্রদান করছে!

একটি বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝা দরকার, হঠাৎ একদিনের আওয়াজেই কিন্তু জামায়াত নামক রাজনৈতিক দল কে যুদ্ধাপরাধী অভিযোগ এনে পঙ্গু করা হয় নি! প্রথমে আওয়াজ তুলা হয়েছে জামায়াত শিবির রাজাকার এই শ্লোগানে এরকম শব্দের মাধ্যমে।

ধীরে ধীরে রাজাকার থেকে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে সমাজে চিহ্নিত করানো হয়েছিলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাওয়া আজকের জামায়াত কে, জামায়াতের কতিপয় ব্যাক্তিবর্গ সেদিন ৭১ এর ভুমিকায় পাকিস্তান পন্থী হলেও সমগ্র জামায়াত নামক দল ও দলের প্রভাবশালী সকল শীর্ষ নেতাদেরই কিন্তু তাদের আওয়াজের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলো ওরা।

স্বাধীনতার সুদীর্ঘ ৪০ বছর পরে এসেও কিন্তু এরকম একটি দাবি তুলে জামায়াতকে ফাঁসাতে ইসলাম ও মুসলমান বিরুধী ষড়যন্ত্র কারী শক্তিগুলো ব্যর্থ হয়নি। বরং তারা তাদের আওয়াজকে বাস্তবায়ন করেছিলো
জামায়াত নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করার মাধ্যমে!

আল্লামা শায়খুল হাদীস রহ.র ইন্তেকালের দীর্ঘদিন পরে এসেও এসব আলেম উলামা বিদ্বেষী অনৈসলামিক শক্তি দেশের তৎকালীন নিকটতম যুগের শীর্ষ স্থানীয় ইসলামী ব্যক্তিত্ব এবং রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক রাহবার আলেম উলামা সহ সর্বমহলের কাছে সর্বজন শ্রদ্ধেয় এ মুরব্বিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আক্রমন করেছে।

তাঁরা এর মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশে আরেকটি আওয়াজ তুলতে চাইছে,দেশের সমগ্র আলেম সমাজকে টার্গেট করেই তাদের আজকের আক্রমণ। যমুনা টিভির মাধ্যমেই সম্ভবত তাদের এ আওয়াজকে তারা ময়দানে ছুড়ে দিয়েছে। ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগোবার চিন্তাও তাদের থাকতেপারে।

সেদিন যেমন তারা সমগ্র জামায়াতকে টার্গেট করেই জামায়াতের একজন ব্যক্তি গোলাম আজমের গায়ে তাদের ষড়যন্ত্রের জীবাণুটা ছাড়িয়ে দিয়েছিলো!

আমার বিশ্বাস ঠিক একই কায়দায় দেশের সমগ্র হক্কানি আলেম সমাজকে টার্গেটে রেখেই কিন্তু তারা আল্লামা শায়খুল হাদীসের কবরে তাদের সুদুরপ্রসারি ষড়যন্ত্রের জীবাণুটা ছড়িয়ে দিতে চাইছে।

বাংলাদেশের আলেম সমাজ সময় থাকতে তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিঘাত ও বলিষ্ঠতা প্রদর্শন করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চিত হয়েই বলতে পারি কপালে খারাবি থেকে আমরা বেশী দূরে নই।

এখনই যদি এসব ষড়যন্ত্র কারী হক্কানি আলেম উলামা বিদ্বেষী শক্তির লাগাম টেনে না ধরতে পারি জামায়াত গোলাম আজম সাঈদীর পরিণতিতে ভুগতে হতেপারে দেশের সমগ্র আলেম সমাজকেই।

যদিও আমরা বাহ্যিকভাবে দেখতে পাচ্ছি ওরা আমাদেরই এক গ্রুপকে তোষণ করে অতি আদরে পাশে বসিয়ে গরু-খাশি-মুরগের রাণ চিবুচ্ছে আর আমাদেরই সেই গ্রুপটা রাণ চিবিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে শোকরানা শরীফ পড়ে শুকুর আলহামদুলিল্লাহ বলে বেড়াচ্ছেন।

বিপরীতে তারা নিজেদের মধ্যে বিভেদ লাগিয়ে আবার তারাই এসে মুরব্বি সেজে অপর গ্রুপকে ধাবড়ানি ধুবড়ানি দিয়ে মাঠ ছাড়া করাচ্ছে!

একটি বিষয় স্পষ্ট গবেষণা করে বুঝবার সময় সম্ভবত এসেগেছে, মৃত আল্লামা মৃত শায়খুল হাদীস রহ.র বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্রের তীরটি ছুড়ে মেরেছে! জীবিত আল্লামা জীবিত শায়খুল হাদীসদের টার্গেটের বাইরে রেখে কিন্তু তারা তাদের তীরটি ছুড়ে মারেনি ।

বাংলাদেশের আলেম সমাজের শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মই এসব সুদুরপ্রসারি ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে পারে। আলেম সমাজের বর্তমান দুর্বল অবস্থান, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব জিইয়ে রেখে কোনোদিন কারো দ্বারা বিদ্বেষীদের ইস্পাত কঠিন এসব তীর ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না।

 

-হাফেজ মাওলানা বিল্লাহ আবু জারাহ

সভাপতি, জাতীয় যুব উলামা  পরিষদ বাংলাদেশ