জীবন গড়ি সীরাতের আলোয় – ০১

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ১৩ ২০১৯, ২৩:৪৭

একুশে জার্নালঃ

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে আয়েশা রা. কে জিজ্ঞেস করা হলো, ঘরে এসে তিনি কি করতেন? আয়েশা রা. বললেন, ‘ঘরে ফিরে তিনি নিজেকে ঘরকন্নার (অর্থাৎ সংসারের টুকিটাকি) কাজে ব্যস্ত রাখতেন।’ (বুখারী)

সংসারের কাজে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকে নিয়োজিত রাখার এই একই বর্ণনা বুখারীর কমপক্ষে তিন জায়গায় আছে। হাদীস আছে, এমনকি তিনি তরবারি দিয়ে রান্নার তরকারি কুটে দিয়েছেন। (শরহে ইবনে বাত্তাল)

তাঁর অভ্যেস ছিল তিনি নিজের কাজ নিজে করতেন। ঘরে থাকা ছেঁড়া জুতো, জামা সেলাই করতেন। বিছানা পরিষ্কার করতেন। (ইবনে হিব্বান)

ইবনে বাত্তাল রহ. মালিকী ফিকহের অন্যতম মহীরুহ ব্যক্তিত্ব। তিনি বুখারী শরিফের ব্যাখ্যায় লিখেন, ‘সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের উচিত পরিবার পরিজনের সাথে গৃহস্থালি কাজে সহায়তা করা। নিজেদের কাজ নিজেরাই করা। এই অভ্যেস তাকওয়াবানদের অভ্যেস।’

হানাফি মাযহাবের প্রখ্যাত ফকিহ হাফিজ বদরুদ্দীন আইনি রহ. লিখেন, ‘ঘরের কাজে সহায়তা করা, পরিবার পরিজনদের জন্য কাজ করা নেক বান্দাদের বৈশিষ্ট্য।’ (উমাদাতুল কারী)

আল্লামা মুহাল্লাব রহ. বলেন, ‘নিজের গৃহস্থালি কাজ নিজেই করা- স্ত্রী, সন্তানাদি ও পরিবারের অন্যদের কাজে সাহায্য করাটা হচ্ছে বিনয়। আর এর গৌরব এখানেই যে, এটা মুসলমানের বৈশিষ্ট্য।’

সুতরাং একজন মুসলিম হিসেবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই সুন্নাতের উপর নিজের অভ্যেস গড়তে হবে আমাদের। এটা এমন এক সুন্নাহ যা প্রত্যেকেরই জানা থাকা স্বত্ত্বেও এর আলোচনা ও চর্চা নিতান্তই কম।

আসুন, আমরা এই মৃতপ্রায় সুন্নাতকে জিইয়ে তুলি। মনে রাখা দরকার এটা কিন্তু আমার রাসুলের রুটিন কাজ ছিল- নিত্যনৈমত্তিক অভ্যেস হিসেবেই। আসুন রমজানে এই অভ্যেস নিজেদের মধ্যে চালু করার মাধ্যমে অধিক সওয়াব অর্জন করে নিই। আসুন ইফতারে, সাহরিতে ঘরের মানুষের কাজে সাহায্য করি। কোমল হই মা-বোন, স্ত্রী, কন্যা, কাজের লোকের প্রতি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোনও সেবককেই নিজের কাজের প্রসঙ্গে বলতেন না, কেন এ কাজ করো নি!