জনপ্রিয় দায়ি এবিত লিউ এখন বাংলাদেশে

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১৯ ২০২৩, ১৫:০৬

বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে বাংলাদেশে এসেছেন বিশ্ববিখ্যাত মালয়েশিয়ার দায়ি এবিত লিউ। বুধবার রাত ১২টার পর তিনি বিশ্ব ইজতেমায় শরিক হয়েছেন বলে জানা যায়।

তিনি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ছবি শেয়ার করেছেন। ছবিতে তাঁকে রিকশায় ঘুরতে দেখা গেছে। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আই লাভ বাংলাদেশ।’

এর আগে বিমানে ওঠে তিনি সবার দোয়া চেয়ে লিখেন, আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমি ঢাকা যেতে পারি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব জনপ্রিয় এই দায়ি একজন নও-মুসলিম। ১২ বছর বয়সে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে তিনি ইসলামের দাওয়াতের পথে বেরিয়ে পড়েন এবং যেখানেই সুযোগ পান, সেখানেই দীন প্রচারে নিজেকে বিলীন করে দেন। ছোট-বড় কিংবা ভালো-খারাপ যে কারো কাছে, যেখানে সেখানে ইসলাম ধর্ম প্রচারে তিনি তৎপর থাকেন।

সম্প্রতি তাঁর এক ভিডিও ভাইরাল হয়। দীনের দাওয়াত দেওয়ার জন্য মালয়েশিয়ার এক পতিতালয়ে চলে যান তিনি। একজন হুজুরকে পতিতালয়ে দেখে সবাই হতবাক হয়ে যান। তিনি পতিতালয়ে কেন, এই চিন্তায় ডুবে যান দর্শকরা। মূলত যারা অর্থের বিনিময়ে নিজের ইজ্জত বিলীন করে দেন তাদের সৎপথ দেখানোর জন্য তিনি পতিতালয় প্রবেশ করেন। সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, পতিতালয়ের মহিলারা এবিত লিউর দাওয়াতের এক পর্যায়ে কান্না শুরু করে দেন। ইসলামের ছায়ায় আশ্রয় নিয়ে তারা পর্দায় নিজেদের আবৃত করে নেন।

আরেকটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, বাজে কাজে জড়িত ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ কিছু তরুণের কাছে যান এবিত লিউ। তাদেরকে ইসলামের বাণী শোনান। তারা এক পর্যায়ে হুজুরের আলোচনায় প্রভাবিত হয়ে পড়েন। তারা নিজেদের ভুল বুঝে কান্না শুরু করলে হুজুর তাদের বুকে জড়িয়ে নেন। এভাবে এবিত লিউ ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেন। তাঁর এরকম বহু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখে পড়ে।

মালয়েশিয়ার সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ নামে পরিচিত। কারণ কারো বিপদে-আপদের খবর শুনলেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে ছুটে চলেন তিনি। এবিত লিউ মূলত একজন মালয়েশিয়ান চাইনিজ মুসলিম।

তিনি মালয়েশিয়ার একজন ইসলামি উদ্যোক্তা এবং ধর্ম প্রচারক। তার পুরো নাম-এবিট ইরাওয়ান বিন ইব্রাহিম লিউ। ১৯৮৪ সালের ২১ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার পাহাং রাজ্যে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। তার পিতার নাম মুয়াডজম শাহে লিউ ইউ পাউ। ১১ জন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।

তিনি স্কুল (সেকোলাহ) কেবাংসান বুকিত রিদান, সেকোলাহ মেননগাহ কেবাংসান মুয়াডজম শাহ, পাহাং সেকোলাহ মেননগাহ টেকনিক জহুর বারু এবং সেকোলা মেননগাহ কেবাংসান আবদুল রহমান তালিব, পাহাং থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন এবং ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

এবিত লিউ দাতু ডা. হাজী মোহাম্মদ ফাদজিল্লাহ কামসাহ এবং অধ্যাপক হানিম তাহিরের পরিচালনায় এক্সেল প্রশিক্ষণের মোটিভেশনাল স্পিকার। তিনি সকলের প্রেরণাদানকারী, ইসলাম আগামা, ইসলাম ইতু ইন্দাহ, উসরাহ নুরানি এবং আইকেআইএম এবং সিনার রেডিওর নিয়মিত বক্তা।

২০১৫ সালে তিনি ‘মওলিদুর রসুল’ জাতীয় পুরস্কার এবং ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় যুব দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সমাজ বিনির্মাণে এবং মহামারি করোনার সময়ে মানব কল্যাণে বিশেষ অবদান রাখায় জাতীয় যুব দিবসের বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী তানশ্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।

এছাড়াও মানব কল্যাণে অবদান রাখায় সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময় তিনি একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন।